শনিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

পেট্রলবোমার সমাধান বলপ্রয়োগে নয় : অ্যামনেস্টি

বিএনপি জোটের অবরোধে পেট্রলবোমা হামলাসহ ‘ভয়াবহ’ নাশকতা ঠেকাতে পুলিশকে যে কোনো ধরনের পদক্ষেপ  নেওয়ার ‘ছাড়পত্র’ দিয়ে বাংলাদেশ সরকার আরও খারাপ পরিস্থিতির ঝুঁকি নিচ্ছে বলে মনে করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিডিনিউজ।
সেই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের নাশকতা থেকে বিরত রাখতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, সব দলেরই এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার বিরোধিতা করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রীর ‘যে কোনো উপায়ে নাশকতা দমনের’ নির্দেশের প্রসঙ্গ টেনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ গবেষক আব্বাস ফয়েজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, এ ধরনের বক্তব্যে ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ’ ও ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ উৎসাহিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, যে অভিযোগ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘আগে থেকেই’ রয়েছে। দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়ে সারা দেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন বিএনপি  চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান অবরোধে নাশকতা ও সহিংসতায় অন্তত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যানবাহনে দেওয়া আগুন ও পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়েছে বহু মানুষ। সরকার নাশকতা ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ  দেওয়ার পাশাপাশি বোমাবাজ ও নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিতে ইতিমধ্যে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। গত বুধবার পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আপনাদের দিতেই হবে। আর সেটা দেওয়ার জন্য যত কঠিন কাজ হোক সেটা আপনারা নির্দ্বিধায় করে যাবেন; অন্তত এইটুকু লিবার্টি আমি আপনাদের দিচ্ছি।’ অবরোধে প্রাণহানির মধ্যেই ১২ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে অন্তত দশজন পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে উল্লেখ করে আব্বাস ফয়েজ বলেন, পুলিশের অভিযানে এসব মৃত্যুর ঘটনা ‘পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত’ করে দেখা উচিত,  কেননা এগুলো ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হয়ে থাকতে পারে।   ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা এসব বাহিনীর দায়িত্ব। কিন্তু তারা  কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং কোনো অজুহাতেই তারা অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করতে পারে না।’ বিবৃতিতে বিএনপির আন্দোলনের ধরন নিয়েও কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও প্রতিবাদের অধিকার সংরক্ষিত। কিন্তু বিএনপির  নেতৃত্বে যেভাবে আন্দোলন হচ্ছে তাতে স্পষ্টতই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হচ্ছে।’  আব্বাস ফয়েজ বলেন, ‘বিএনপির উচিত, তাদের কর্মী-সমর্থকদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখা এবং ফৌজদারি আইনে নিরপেক্ষভাবে এসব কর্মকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত।’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সহিংসতা পরিহারের পাশাপাশি পেট্রলবোমা নিক্ষেপকারীদের বিচারের আওতায় আনতে তদন্তে সহযোগিতার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর