শনিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
‘শান্তির জন্য হোক প্রতিবাদ’

রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ানো বন্ধ করুন

রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ানো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। গতকাল বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘শান্তির জন্য হোক প্রতিবাদ’ শীর্ষক সমাবেশ থেকে বক্তারা এ আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, মানুষের জন্যই রাজনীতি। মানুষকে পুড়িয়ে মারার জন্য রাজনীতি নয়। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ক্ষমতায় যাওয়ার নাম রাজনীতি নয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক আবেদ খান, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাসদ নেতা নাজমুল হক প্রধান, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, অধ্যাপক অহিদুজ্জামান, কবি আসলাম সানি, সাবেক তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম, পেট্রলবোমায় আহত ইডেনের ছাত্রীর পিতা ব্যবসায়ী খোকন প্রমুখ।
অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যেভাবে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তা দেখে মনে হয় এটি মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশ নয়। যারা পেট্রলবোমা ও অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যায় নেমেছে তারা দানব। এসব দানবের বিরুদ্ধে মানবের সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। আর সেই সংগ্রামে মানবের জয় হবেই।    
সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, সত্তরের নির্বাচনের পর পাকিস্তানিদের সঙ্গে সংলাপ করলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। আজকে দেশে রাজনীতির নামে সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। সংলাপ তখনই হয় যখন দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে। অনেকে সর্বদলীয় সরকার গঠনের কথাও বলছে যা মানা যায় না। দেশে শুধুই তারা রাজনীতি করবে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। সংবিধানের প্রতি আনুগত্যহীন কোনো দলের রাজনীতি করার অধিকার বাংলার মাটিতে নেই।
অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করার পর মনে হয়েছিল আমার বুক ৩২ ইঞ্চি থেকে বেড়ে ৪০ ইঞ্চি হয়েছিল। কিন্তু একটি স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষকে হত্যার দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে আমার বুক আস্তে আস্তে আবারও ৩২ ইঞ্চি হয়ে যাচ্ছে। গুটিকয়েক মানুষের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে আমরা হরতাল অবরোধের নামে মানুষ হত্যার অপরাজনীতি চলতে দিতে পারি না।
তরুণ সমাজকে দেশের মাটি থেকে এই অপরাজনীতিকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, দেশ স্বাধীন হলেও যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। যুদ্ধে বিরতি ছিল। আমরা নিজেদের বিজয়ী মনে করে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েছিলাম। কিন্তু আরেকবার শেষ যুদ্ধ করতে হবে। এর মাধ্যমে নির্ধারিত হবে দেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা থাকবে, না মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি থাকবে।
সমাবেশের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতাল-অবরোধে নিহত হওয়াদের প্রতি সম্মান জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবু হানিফ, আসাদুজ্জামান আসাদ, যুগ্ম-সম্পাদক শামসুল কবির রাহাতসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে। সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় প্রতিবাদী সংগীতানুষ্ঠান হয়।
 

সর্বশেষ খবর