শুক্রবার, ৮ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
সারবাহী জাহাজ ডুবি

ডলফিনের দেখা নেই সুন্দরবনে শুরু হয়নি জাহাজ উদ্ধার

ডলফিনের দেখা নেই সুন্দরবনে শুরু হয়নি জাহাজ উদ্ধার

সুন্দরবনে ভোলা নদীর বিমলের চরে ডুবে যাওয়া সার বোঝাই এমভি জাবালে নূর লাইটারেজ জাহাজ উদ্ধার কাজ তৃতীয় দিনেও শুরু হয়নি। তবে গতকাল সকাল থেকে জাহাজের ভিতরে থাকা অবশিষ্ট পটাশ সার মিশ্রিত পানি ড্রেজার দিয়ে অন্য কার্গোতে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে গতকাল ভোলা ও শ্যালা নদীতে ডলফিনের দেখা মেলেনি। পানি বিষাক্ত হয়ে পড়ায় বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতি ডলফিনসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন অন্য কোনো নদী বা বঙ্গোপসাগর উপকূলে আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জাহাজের অধিকাংশ সার পানিতে মিশে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে ছড়িয়ে পড়েছে। সারের আস্তরণ নদীর পানিতে ভাসছে। জাহাজের মালিক পক্ষ বা মাস্টার-নাবিক     কাউকেই পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া উদ্ধারকারী জাহাজ এমভি নুসরাত-ই-হক ও এমভি তছির উদ্দিন দেখা যায়নি। শত-শত মেট্রিক টন সার মিশ্রিত পানিতে অক্সিজেন কমিয়ে দ্রুত লবণাক্ততা বাড়িয়ে পানি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। দুর্ঘটনাস্থল ও নদী-খালের পানিতে কতটুকু অক্সিজেন রয়েছে তা এখনো পরীক্ষা করে দেখেনি সুন্দরবন বিভাগ। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ডলফিনের অভয়াশ্রম হিসেবে খ্যাত ভোলা ও শ্যালা নদীতে ঘুরে ডলফিনের দেখা মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে ডলফিনের অভয়াশ্রমের পানি বিষাক্ত হয়ে পড়ায় বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতি ডলফিনসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন সুন্দরবনের অন্য কোনো নদী বা বঙ্গোপসাগর উপকূলে আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলীপ দত্ত জানান, বিপুল পরিমাণ সার একসঙ্গে দ্রবিভূত হয়ে জলজ প্রাণি সম্পদের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম জানান, সার পানিতে মিশে সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে পানি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। সুন্দরবনের নদী-খালের পানিতে কতটুকু অক্সিজেন রয়েছে তা জরুরি ভিত্তিতে পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। বিরল প্রজাতির ডলফিন, শুশুক, বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণির মারাত্মক ক্ষতির পাশাপাশি সুন্দরবনে এখন নদ-নদীতে মাছের প্রজনন মৌসুম চলায় সার বোঝাই জাহাজ ডুবিতে ক্ষতির আশঙ্কা আরও বেড়েছে। বাগেরহাটের কৃষি বিভাগের উপপরিচালক (ডিডি) মো. জয়নুল আবেদীন জানান, সার পানিতে মিশলেও চলন্ত মাছ বা ডলফিনের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। তবে শামুক, ঝিনুকসহ ক্ষুদ্র কিছু জলজ প্রাণির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ডিএফও মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী দাবি করেন, পটাশ সার জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। সুন্দরবন বিভাগ বুধবার রাতে শরণখোলা থানায় বনে ইতিমধ্যে ১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে জাহাজ মালিক আমিনুল ইসলাম, চালক মো. হাফিজুর রহমানসহ কার্গোর চারজনকে আসামি করে মামলা করেছে। এ ছাড়াও ৩টি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

সর্বশেষ খবর