শুক্রবার, ৮ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

সংকটের শেষ নেই বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের

অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন তাদের ফিঁকে হতে চলেছে। গত ৪ মে প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষা শুরু হলেও সুপ্রিমকোর্টের রিভিউ নিষ্পত্তি না হওয়ায় তারা এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। কয়েক মাস পরে এর সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। সব আইনি জটিলতা কাটিয়ে এসব শিক্ষার্থী সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় অংশ নিতে চান। এ দাবিতে বেসরকারি মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। গতকাল তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনে অংশ নিয়েছেন। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। আইনি জটিলতা কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, এমবিবিএস/ বিডিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ও ভর্তি পরীক্ষার মোট ২০০ নম্বরের স্কোরের মধ্যে ১০৫ পর্যন্ত পেলেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশনও পেয়ে যেতেন। কিন্তু ২০১৩-১৪ সালে শিক্ষার্থী ভর্তি করার পর সরকারপক্ষ এ যোগ্যতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে। পরে এর যোগ্যতা বাড়িয়ে ১২০ নম্বর করা হয়। কিন্তু বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আপিল করলে এ যোগ্যতা কমিয়ে ১০৫ করা হয়। সরকারপক্ষ ফের রিট করলে আবার ১২০ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে বিপিএমসিএ ফের আপিল করলে যোগ্যতার নম্বর কমিয়ে ১০৫ করা হয়। সরকারপক্ষ সুপ্রিমকোর্টে এ রায়ের বিপক্ষে রিভিউ আবেদন করে। এ রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হয়নি। তাই কম মার্ক পাওয়া (১০৫) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন পাননি। এসব শিক্ষার্থী বলেছেন, ১০৫ মার্ক যোগ্যতা আমলে এনে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তারা বলেন, রেজিস্ট্রেশনভুক্ত না করে আমাদের প্রফেশনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আগামীতে সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষাতেও আমাদের অযোগ্য ঘোষণা করা হলে আমাদের দুর্দশার শেষ থাকবে না। শিক্ষাজীবন ফিরে পেতে এই শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, সমাবেশ করছেন। গত ১৫ এপ্রিল তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। গতকাল তারা প্রেসক্লাবের সামনে অনশনে অংশ নেন। এ সময় গাজীপুরের ইন্টারন্যাশন্যাল মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী রেজওয়ান মৃধা, উত্তরার ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজের রুবাইয়াত-ই-ফারিহা, জান্নাতুল ফেরদৌস, নাইমুর রহমান মৃš§য়, বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের সজল মোজাহিদ, মানিকগঞ্জের মুন্নু মেডিকেল কলেজের এনামুল হক, মিরপুরের মার্কস মেডিকেল কলেজের উৎসব বলেন, আমরা ভর্তির পর প্রায় দেড়বছর পার করেছি। এ সময়ে আমরা কলেজের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। এ ছাড়া ভর্তির সময় যোগ্যতা ১০৫ মার্কই নির্ধারণ ছিল। রেজওয়ান মৃধা বলেন, একই স্কোর নিয়ে আমাদের বন্ধুরা চীন, ভারত, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে মেডিকেলে অধ্যয়নরত থাকলেও আমাদের ভর্তি করে এখন বিপাকে ফেলা হয়েছে। আমাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত।
 আমাদের রেজিস্ট্রেশন না দেওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব। কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে বেসরকারি মেডিকেলের এসব ভুক্তভোগি অংশ নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভর্তির পর যদি শিক্ষাজীবন থমকে যায়, পরীক্ষা দিতে না পারি তবে এ জীবনের দাম কী?

সর্বশেষ খবর