শিরোনাম
বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
স্থানীয় সরকার নির্বাচন

প্রচারে নিষিদ্ধ হচ্ছেন এমপি-মেয়ররাও

গোলাম রাব্বানী

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পাশাপাশি এমপি-মেয়ররাও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রভাবমুক্ত করতেই এমপি-মেয়রদের নির্বাচনী প্রচারে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য দলভিত্তিক স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সরকারি সুবিধাভোগীর তালিকায় সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়রদের আনার আলোচনা চলছে নির্বাচন কমিশনে। ইসির খসড়া বিধিমালায় এসব বিষয় রাখা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন সংশোধনের পর এই বিধিমালা হলে পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারবেন না সংসদ সদস্য ও সিটি মেয়ররা। বিদ্যমান স্থানীয় সরকারের সব স্তরের আচরণবিধিতে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সমমর্যাদার ব্যক্তিদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়রকেও যুক্ত করা হয়। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ সদস্য সংশ্লিষ্ট উপজেলায় উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির দায়িত্বে। স্থানীয় নির্বাচনে তাদের প্রভাব পড়বে। তেমনি সিটি মেয়রদের প্রভাবও রয়েছে। দশম সংসদেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় তারা রয়েছেন। আচরণবিধিতে সরকারি সুবিধাভোগীদের তালিকা বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন ইসির একজন উপসচিব। সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা সব ধরনের সুবিধা ছেড়ে শুধু নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে ভোট দিতে এলাকায় যাবেন।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো স্থানীয় নির্বাচন দলভিত্তিক করতে আচরণবিধিতেও পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আবদুল মোবারক। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার আইন সংশোধন-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি অথবা বিল পাস হলে এর আলোকে আচরণবিধিতেও কিছু সংশোধনী আনতে হবে। সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিষয়ে সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্বাচন প্রভাবমুক্ত করতে যা যা করার করব আমরা।’ আবদুল মোবারক বলেন, এখন সবকিছু সংশোধিত অধ্যাদেশ বা আইনের ওপর নির্ভর করছে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর সংশোধিত আইনটি হাতে পেলেই দ্রুত সব করা হবে।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদের আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় রেখেই আচরণবিধি করতে হবে স্থানীয় নির্বাচনের জন্য। সে ক্ষেত্রে দলীয় প্রধানের ছবি, দলীয় প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ থাকছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সুবিধাভোগী ব্যক্তির তালিকা নির্ধারণ করে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।

স্থানীয় নির্বাচনের আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলেও তা সংসদে পাস হতে হবে। পৌরসভা নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় অধ্যাদেশ জারি করে আইন কার্যকর হবে। অধ্যাদেশের গেজেট হলেই বিধিমালা সংস্কারে হাত দেবে ইসি।

ইসির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সময় অল্প থাকায় আমরা মৌখিক নির্দেশে বিধিমালাগুলো পর্যালোচনা করছি। আইন বা অধ্যাদেশ জারি হলেই দ্রুত যেন বিধিমালা জারি করা সম্ভব হয় সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দলভিত্তিক স্থানীয় সরকার নির্বাচন সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট আইন সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলেই সবচেয়ে ভালো হতো।

সর্বশেষ খবর