বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কুমির হাতি সাপ পালনে লাইসেন্স লাগবে

মোস্তফা কাজল

লাইসেন্সের আওতায় আসছে কুমির, হাতি, সাপ ও পাখি লালন-পালন। শখের বশে ও বাণিজ্যিকভাবে এসব প্রাণীর লালন-পালনের হালনাগাদ কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই।এসব কারণে চারটি বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে বিধিমালাটি অনুমোদনের জন্য খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিধিমালা অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

এ চারটি বিধিমালা হচ্ছে সাপের খামার ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১৫, পোষা পাখি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১৫, কুমির লালন-পালন বিধিমালা ২০১৫ ও হাতি লালন-পালন বিধিমালা ২০১৫। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী এ বিধিমালাগুলো করা হয়েছে। দেশে সাপ ও কুমিরের খামার রয়েছে প্রায় এক ডজন। আবার হাতিও পালন করেন কেউ কেউ। পোষা পাখি পালন ও বেচাকেনা তো আছেই। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে এত দিন কোনো বিধিমালা ছিল না। জানতে চাইলে পরিবেশ ও বন সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হরিণ ও কাঁকড়াসহ কিছু প্রাণীর জন্য কয়েকটি বিধিমালা রয়েছে। এখন কুমির, সাপ, হাতি ও পাখির জন্য বিধিমালা করা হচ্ছে। প্রাণীদের সংরক্ষণের বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে এ বিধিমালাগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা খামার করছেন তারাও একটা নিয়মের মধ্যে আসবেন। তিনি আরও বলেন, বিধিমালার বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের মতামতও নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেলে শিগগিরই বিধিমালাগুলো চূড়ান্ত করা হবে।

পোষা পাখি : এ বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ছাড়া পোষা পাখির উৎপাদন, লালন-পালন, ক্রয়-বিক্রয় ও আমদানি-রপ্তানি করতে পারবে না। এ ছাড়া বিধিমালা জারির আগে স্থাপিত পাখি, সাপ ও কুমিরের খামারকে এ বিধিমালা জারির ৬০ দিনের মধ্যে আবেদন করে লাইসেন্স নিতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে লাইসেন্সের মেয়াদ হবে এক বছর। এক বছর পর লাইসেন্স নবায়ন করে নিতে হবে। লাইসেন্স দেবে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বা তার মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। বিধিমালাতে আরও বলা হয়েছে, শৌখিন পোষা পাখি পালনকারী মানে যারা শখের বশে বাড়িতে বা কোনো প্রতিষ্ঠানে পোষা পাখি লালন-পালন করেন এবং এ ক্ষেত্রে পাখির সংখ্যা ১০০টির বেশি হবে না।

সাপের খামার : সাপের খামার স্থাপন বা পরিচালনার  ক্ষেত্রে পালনীয় শর্তের বিষয়ে খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, একটি সাপের খামারের জন্য কমপক্ষে দুই একর সম্পূর্ণ নিজস্ব মালিকানাধীন বা দীর্ঘমেয়াদি ইজারা নেওয়া (কমপক্ষে ৩৩ বছর) জমি থাকতে হবে। যা হবে সম্পূর্ণভাবে বন্যামুক্ত, খামারটি বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রিত সব ধরনের বনাঞ্চল থেকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার দূরে হতে হবে।

কুমির খামার : কুমির লালন-পালন বা খামার স্থাপনে কমপক্ষে পাঁচ একর বন্যামুক্ত ভূমি থাকতে হবে। খামার মালিককে শুধু আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, লুপ্তপ্রায় প্রজাতি আন্তর্জাতিক ট্রেড নেভিগেশন কনভেনশন (সিআইটিইএস) নিবন্ধিত খামার থেকে কুমির সংগ্রহ করতে হবে।

হাতি পালন : খসড়া এ বিধিমালায় হাতি লালন-পালনের শর্তাবলিতে বলা হয়েছে, সংখ্যাধিক্য বা অন্য কোনো কারণে শুধু বন বিভাগ, সরকারি বা বেসরকারি চিড়িয়াখানা অথবা অন্য কোনো সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বিধিবদ্ধ সংস্থা ও বিধিমালার অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাতি লালন-পালনকারীরা হাতি ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর, দান বা বিনিময় করতে পারবেন। এসব বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের কর্মকর্তার লিখিত অনুমতি নিয়ে করতে হবে। এ ছাড়া হাতি লালন-পালনকারীদের প্রতিটি হাতির কানে ‘ট্যাগিং’-এর মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে।       

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর