একটি গোষ্ঠীর বিমানবন্দরকেন্দ্রিক বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা থেকে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ঢাকায় হযরত শাহজালাল (রহ.) ও চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তায় ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তল্লাশি কাজে সহায়তা নেওয়া হচ্ছে এলিট ফোর্স র্যাবের ডগ স্কোয়াডের। গতকাল থেকে চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তল্লাশি কাজে সহয়তা করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ডগ স্কোয়াড। আজ থেকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তল্লাশি শুরু করার কথা রয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার ও রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যা ও ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলায় একজনের মৃত্যুর পর দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ অক্টোবর থেকে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিকসহ সব বিমানবন্দরে ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করা হয়েছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঢিলেঢালা ভাব চলছিল। কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমন ঢিলেঢালা ভাব চলে না। তাই বাড়তি নিরাপত্তা পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে কেউ এমন বিস্ফোরক নিয়ে আসতে পারে যেটি মেটাল ডিটেক্টরে বা রে-তে ধরা পড়বে না।
গতকাল বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানান, বিজিবির ডগ স্কোয়াডে ৪৭টি প্রশিক্ষিত বিদেশি কুকুর আছে। এরা বিস্ফোরক, মাদক ও ক্ষুদ্র অস্ত্র শনাক্তে পারদর্শী। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিবির ডগ স্কোয়াড কাজ শুরু করেছে। চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, যে কোনো নাশকতা ঠেকাতে এবং অস্ত্র-বিস্ফোরক বহনকারীদের শনাক্ত করতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াড মোতায়ন করেছে বিজিবি। বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থাপনায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কার মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এ কার্যক্রম শুরু করেছে বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বিজিবির ১২ জন সদস্য দুটি প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে তল্লাশি ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু করে বিজিবি। ২৮ ব্যাটালিয়ন বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল এমারত হোসেন বলেন, কেউ অস্ত্র-বিস্ফোরক, মাদক নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করলে ডগ স্কোয়াড সেটি তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করতে পারবে। বিমানবন্দরকে আরও নিরাপদ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে।এর আগে গত ২৫ অক্টোবর শাহ আমানত বিমানবন্দরে যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই অথবা হামলা হতে পারে বলে গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য পেয়ে সিএমপি ২৬ অক্টোবর থেকে শাহ আমানতে এপিবিএন মোতায়েন করে। এ ছাড়া বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বেশকিছু পদক্ষেপও নেয় কর্তৃপক্ষ।