শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গানম্যান ও নিরাপত্তা আবেদনের ছড়াছড়ি, বিব্রত মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষক, লেখক, প্রকাশক, সাংবাদিক, ব্লগারসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিয়ে বিভ্রান্তি চলছে। অনেকে কারণে-অকারণে গাড়িসহ গানম্যান এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দাবি করছেন সরকারের কাছে। এ নিয়ে বিব্রত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। অনেকের এ চাওয়া-পাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের দায়িত্বশীল মহল বলছে, যাদের প্রয়োজন তাদের নিরাপত্তা দিতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অকারণে পাবলিক নুইসেন্স সৃষ্টি করে নিজেদের ভিআইপি বানানোর জন্য ধর্মকে কটাক্ষ করে ব্লগে ধর্ম ও বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আক্রমণ করে লেখালেখি করছেন। আবার অনেকে হুমকির কথা বলে জিডি করলেও পরবর্তীতে দেখা গেছে তারা কোনো রকম হুমকিতে নেই। আবার অনেকে এর মধ্যে গানম্যান নিয়েছেন। কেউ কেউ নেন গাড়ির সুবিধাও। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকট তৈরি হচ্ছে।

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সবাই যদি গানম্যান চায় তাহলে সবাইকে গানম্যান দেওয়া কি সম্ভব? আমরা সব মানুষের নিরাপত্তা দেব। তবে হ্যাঁ, এখন অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বিষয় যদি হয়, তাহলে সেটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। যদিও তিনি নিরাপত্তা চেয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আবেদন মন্ত্রণালয় বা আমার কাছে জমা দেননি। তারপরও দেশের বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে সরকার তার নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে।  সাম্প্রতিক সময়ে দেশে হঠাৎ করেই লেখক, প্রকাশক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ব্লগারদের ওপর হামলা ও হুমকি বেড়ে গেছে। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চকে কেন্দ্র করে এর সংগঠকদের নানাভাবে হত্যার হুমকি দিতে থাকে জামায়াত-শিবিরসহ মৌলবাদী সংগঠনগুলো। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির সুবিধাবাদী গোষ্ঠী সরকারের কাছ থেকে নিজেদের ব্যক্তি সুবিধা নিতে নানাভাবে তৎপরতা শুরু করে। তারা নিজেরা নিরাপত্তা চেয়ে একদিকে থানায় জিডি করে, অন্যদিকে সরকারের বিভিন্ন মাধ্যমের কাছেও নিরাপত্তা চায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, তাদের কাছে কেউ ব্যক্তিভাবে নিরাপত্তা চায়নি। তবে কেউ যদি সরকারের কোনো মন্ত্রীর কাছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়ে থাকে, তাহলে সেটা তাদের দেখার বিষয় নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ে কোনো আবেদন জমা না পড়বে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেটা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো কিছু করার নেই। এদিকে গত ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগে জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। একই দিনে আরেক প্রকাশক আহমেদুর রহমান টুটুলকে তার লালমাটিয়ার অফিসে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা। তার সঙ্গে আরও দুই লেখক তারেক ও রণদীপমকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনার পর একজন প্রকাশক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়েছেন। এমনকি তিনি গানম্যানও দাবি করেছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, এভাবে সবাই যদি গানম্যান চান তাহলে তো গানম্যানের জন্য টেন্ডার আহ্বান করতে হবে। তিনি বলেন, কোনোভাবেই ব্যক্তির জন্য গানম্যান দেওয়া সম্ভব নয়।

সর্বশেষ খবর