বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে মুজাহিদ সাকার ফাঁসি

প্রতিদিন ডেস্ক

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রিভিউ আবেদনে ফাঁসির রায় বহাল থাকার বিষয়টি ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরা রয়টার্সের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, প্রায় ডজন খানেক জামায়াত নেতাকে দণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তারা শিরোনাম করেছে ‘ডেথ সেনটেনসেস ফর টু বাংলাদেশ লিডার আপহেল্ড’। এতে বলা হয়েছে, ইসলামী দল ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি) দুই নেতাকে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হলেই ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হবে। গতকাল এই শীর্ষ দুই রাজনীতিবিদের আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বহাল রেখে তাদের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এর আগে জামায়াতের আরও দুই নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মুজাহিদ হচ্ছেন এই দলের তৃতীয় ব্যক্তি। অন্যদিকে সাকা চৌধুরী বিরোধী বিএনপির সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া প্রথম ব্যক্তি। বার্তা সংস্থাটি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্ধৃতি দিয়ে এ বিচারকে মিসক্যারেজ অব জাস্টিস বলেছে। তারা প্রশ্ন করেছে, বাংলাদেশে কি যুদ্ধাপরাধের বিচার সুষ্ঠু হয়েছে? কারণ মুজাহিদকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে সে ফ ‘পরিকল্পনা’ ও ‘সিনিয়র সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে’ অংশ নিয়ে একাত্তরের যুদ্ধের শেষ দিন ১৭ বুদ্ধিজীবীকে হত্যায় ভূমিকা রাখার দায়ে। কয়েক মাস আগে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের এ দুই ব্যক্তির মামলা নিয়ে সমালোচনা করেছিল। বিবিসি বাংলা শিরোনাম করেছে, ‘মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ বহাল’। গণমাধ্যমটি লিখেছে, রিভিউ পিটিশন হচ্ছে আইনগত প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ। এরপর আর কোনো আইনগত প্রক্রিয়া নেই। রিভিউ পিটিশন খারিজ হয়ে যাওয়ায় আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীর সামনে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। ডয়েচে ভ্যালে শিরোনাম করেছে, ‘সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ, সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ’। গণমাধ্যমটি লিখেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় বহাল রেখেছেন আদালত। এদিকে এ আদেশের পরই নিরাপত্তার কারণে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস সাকা ও মুজাহিদকে রাজনীতিক আখ্যা দিয়ে শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশ কোর্ট আপহোল্ডস ডেথ সেনটেনসেস অব টু পলিটিশিয়ানস’। গণমাধ্যমটি লিখেছে, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল দুই প্রভাবশালী বিরোধী নেতাকে একাত্তরে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আদালত রায় ঘোষণার পরপরই বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি এক বিবৃতির মাধ্যমে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়, যেন প্রোপাগান্ডা ও দেশে সহিংসতা ছড়াতে না পারে। জামায়াতে ইসলামী এ রায়ের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (আজ) সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। এ ছাড়া দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, এএফপি, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ায় এই দুই বিরোধী নেতার ফাঁসির আদেশ রিভিউ আবেদনে বহালের বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ’৭১-এর দুই রাজাকারের ফাঁসি বহাল রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল।

সর্বশেষ খবর