বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ব্লগার নীলাদ্রি হত্যা

হুমকিদাতাসহ তিনজন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

হত্যার আগে ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে হুমকি এবং হত্যার পর এর দায় স্বীকারকারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেনÑ হুমকিদাতা মুফতি মাওলানা আবদুল গাফফার, দায় স্বীকারকারী মর্তুজা ফয়সাল সাব্বির ও তরিকুল ইসলাম তারেক। গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ড প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকলেও সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন কি-না তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে মুফতি আবদুল গাফফারকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে আনসার আল ইসলাম নামে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারকারী তারেককে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সাব্বিরকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, ১৫ মে মাওলানা আবদুল গাফফার ইসলামের সৈনিক সত্যের লড়াকু নামে ফেসবুক আইডি খুলে নীলাদ্রিকে উদ্দেশ্য করে ‘আইতাছি তোরে কোপামু চাপাতি দিয়া’ লিখে হত্যার হুমকি দেন। চট্টগ্রামের জামেয়াতুল ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসায় পড়ার সময় বন্ধুদের প্রচারণায় কথিত জিহাদি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ছাত্রশিবির নেতা সাব্বির ও তারেকুল ‘আনসার আল ইসলাম’ নামে আইডি খুলে লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর কার‌্যালয়ে হামলা এবং আজিজ সুপার মার্কেটে হামলা চালিয়ে দীপনকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। সাব্বির চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার শিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তারেকুল একই থানা এলাকার একটি ওয়ার্ডের সভাপতি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সাব্বির সীতাকুণ্ডের স্থানীয় ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করতেন। নীলাদ্রি হত্যার পর আনসার আল ইসলাম নামে একটি পেজে দায় স্বীকার করে স্ট্যাটাস দেন সাব্বির। তারেক ওই পোস্টে প্রথম লাইক দেন এবং ধন্যবাদ জানিয়ে মন্তব্য ও শেয়ার করেন। নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তারেকের বিরুদ্ধে ২০টির বেশি মামলা আছে। গতকাল দুপুরে তিনজনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত প্রত্যেককে পাঁচ দিনের করে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। প্রসঙ্গত, ৭ আগস্ট রাজধানীর গোড়ানে নিজ বাসায় ব্লগার নীলাদ্রিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্ত্রী আশামনি অজ্ঞাত পরিচয় চারজনকে আসামি করে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। মৃত্যুর আগে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে ক্রমাগত হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন নীলাদ্রি। নিরাপত্তাহীনতার জন্য জিডি করতে গেলে থানা তা না নিয়ে উল্টো দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেয় বলেও ফেসবুকে লিখেছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর