বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মহাসড়কে বন্ধ হয়নি থ্রি-হুইলার

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়ক মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে থ্রি-হুইলার চলাচল এখনো বন্ধ হয়নি। সরকারি সিদ্ধান্তের সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক) ও মোটরচালিত রিকশাগুলো। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনেকটা নির্বিঘেœ চলছে এসব যান। ফলে আগস্টে এই সিদ্ধান্তের পর মহাসড়কে কিছুদিন সড়ক দুর্ঘটনা কমে এলেও গত কয়েক মাসে দুর্ঘটনা আবার উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে। সড়ক  নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততা এবং কার্যকর তদারকির অভাবে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাচ্ছে না। মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে গত আগস্টের শুরুতে দেশের ২২টি মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, অটোরিকশা, অটোটেম্পো ও অযান্ত্রিক যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে ১ আগস্ট থেকে দেশের মহাসড়কে অটোরিকশা ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রয়োজনে মহাসড়কে থ্রি-হুইলারের জন্য আলাদা লেন চিহ্নিত করে দেওয়া হবে। সরকারি সিদ্ধান্তের প্রথম দিকে পুলিশি তৎপরতার কারণে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল কমে যায়। এ সময় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যাও প্রত্যাশিতভাবে অনেক কমে যায়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বাড়তে থাকে। বর্তমানে সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলছে নিষিদ্ধ ঘোষিত তিন চাকার যানগুলো। আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, রাজধানীর সঙ্গে দেশের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের সংযোগকারী ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে তিন চাকার যান নির্বিঘেœ চলাচল করছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কে প্রায় নিয়মিত সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তিন চাকার ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লা অংশের ১০০ কিলোমিটার এলাকা ও কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কে কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় অটোরিকশা চলাচল করছে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড ও সুয়াগাজী, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়াবাজার, আদর্শ সদর উপজেলার নন্দনপুর, আলেখারচর ও ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা এবং বুড়িচং উপজেলার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় মহাসড়কে নির্বিঘেœ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটর লাগানো রিকশা চলতে দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে সুয়াগাজী এলাকা পর্যন্ত অটোরিকশা চলছে। কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকা থেকে পশ্চিমে নিমসার এলাকা পর্যন্ত সিএনজি অটো চলছে। বুড়িচংয়ের কাবিলা বাজারের সিএনজি অটোচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, পুলিশের অভিযানের ওপর লক্ষ্য করে গাড়ি চালাতে হয়। ধরা পড়লে জরিমানার সঙ্গে রয়েছে মারধর। তাই পুলিশকে সন্তুষ্ট করে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়। নিষিদ্ধ তিন চাকার গাড়িগুলোকে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া বেশি আদায় করতেও দেখা যায়। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে অবাধেই চলছে থ্রি-হুইলার অটোরিকশা ও অটোটেম্পো। নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার প্রথম দিকে কিছুদিন এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চললেও এখন অভিযান না থাকায় মহাসড়কে এসব যান চলতে দেখা যায়। মহাসড়কে অটোরিকশার চলাচল প্রসঙ্গে পূর্বাঞ্চল হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লার এক কর্মকর্তা বলেন, মহাসড়কে এখন আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায় অটোরিকশা চলাচল করে। তবে আমরা চেষ্টা করি এসব যানবাহন যেন হাইওয়েতে না আসে। মাঝে মধ্যে এদের ধরে জরিমানা ও মামলা দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর