শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

রিটের জালে ২ হাজার কোটি টাকা

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

রিটের জালে ২ হাজার কোটি টাকা

হাইকোর্টে রিট মামলার জালে আটকে আছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের ১ হাজার ৮০৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রায় সাড়ে ১০ হাজার রিট মামলায় বিশাল অঙ্কের এ টাকা দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। তবে এ টাকা আদায়ে জোর তৎপরতা শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি গঠন করা হয়েছে ‘লিগ্যাল সলিউশন গ্রুপ’। এর মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ রেজাউল হক। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রিট মামলার সংখ্যা বাড়তে বাড়তে কিছুদিন আগে ১২ হাজারেরও অধিক হয়ে যায়। এসব মামলায় কাস্টমসের রাজস্ব আটকে ছিল ২ হাজার ৩২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৫০৮টি মামলার রায় কাস্টমসের পক্ষে আসে। যেগুলোর রাজস্বের পরিমাণ ১৪১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আর ব্যবসায়ীদের পক্ষে বা কাস্টমসের বিপক্ষে যায় ২৩৫টি মামলার রায়। এতে রাজস্বের পরিমাণ হচ্ছে ৮৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এসব মামলা থেকে এ পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। নিষ্পত্তি হওয়ার পর আরও প্রায় সাড়ে ১০ হাজার রিট মামলা রয়েছে। আর এসব মামলায় রাজস্ব আটকে আছে ১ হাজার ৮০৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। রিট মামলার জালে আটকে থাকা রাজস্ব আদায়ে বিচারিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে একজন সহকারী কমিশনার ও একজন সহকারী রেভিনিউ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।             এদের একজনের দায়িত্ব এটর্নি জেনারেলের কার্যালয় কেন্দ্রিক ও আরেকজন দায়িত্ব পালন করেন হাইকোর্টে। রিট মামলার ব্যাপারে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দুজনই তৎপর থাকেন বলে জানালেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আজিজুর রহমান। এদিকে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃপক্ষ তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। এরই অংশ হিসেবে রিট মামলার ফাঁদে আটকে থাকা রাজস্ব আদায়ে উদ্যোগী হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এবারের ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বাজেটে প্রবৃদ্ধির আকাক্সক্ষা ৭ শতাংশ। এতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে ৩০ দশমিক ৬২ শতাংশ। বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১২ দশমিক ১ শতাংশ। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে পণ্যের শুল্কায়নের ক্ষেত্রে এইচএস কোডের তারতম্যের অভিযোগ এনে এসব রিট করেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা এইচএস কোডের মাধ্যমে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক হার নির্ধারণ করে থাকেন। কিন্তু একেক পণ্যের ক্ষেত্রে একেক ধরনের শুল্ক হার থাকায় এ নিয়ে প্রায়ই জটিলতা সৃষ্টি হয়। যার ফলে আইনের দ্বারস্থ হন ব্যবসায়ীরা। এতে অনেক সময় রিট মামলার রায় ব্যবসায়ীদের পক্ষে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনানুযায়ী কাস্টমসের পক্ষেই যায়। আর এ ক্ষেত্রে ব্যাপক ভুমিকা রেখে চলেছে ‘লিগ্যাল সলিউশন গ্রুপ’।

সর্বশেষ খবর