শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বন্ড সুবিধার আড়ালে ১২ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পণ্য আমদানিতে শুল্কমুক্ত বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার আড়ালে ১২ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ এলাকার লিবার্টি এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সাড়ে তিন হাজার টন কাঁচামাল আমদানি করে অবৈধভাবে খোলাবাজারে বিক্রি করার দায়ে গত মঙ্গলবার মামলা করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। লিবার্টি এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের পরিচালক। তার আরেক প্রতিষ্ঠান সানরাইজ এক্সেসরিজের  বিরুদ্ধে সাড়ে তিন কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে গত সোমবার আরেকটি মামলা করা হয়। এ প্রসঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার আড়ালে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এ রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের ফলে সৎ ব্যবসায়ীরা অসম প্রতিযোগিতায় পড়ছেন। জানা গেছে, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত ১২ সদস্যের কমিটি তদন্তে নেমে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে মেসার্স লিবার্টি এন্টারপ্রাইজের বিপুল অঙ্কের শুল্ক ফাঁকির বিষয়টি জানতে পারে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৮ নভেম্বর মেসার্স লিবার্টি এন্টারপ্রাইজের কারখানা ও বন্ডেড ওয়্যার হাউসে সরেজমিন তদন্ত পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং দাফতরিক কাগজপত্র ঘেঁটে জানা যায়, রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে ব্যবহার না করে ওই পরিমাণ কাঁচামাল বন্ডেড ওয়্যার হাউস কর্তৃপক্ষ গোপনে খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। ওই পরিমাণ পণ্যের বাজারমূল্য প্রায় ৪৬ কোটি টাকা। আর বন্ড সুবিধার পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি করায় ১২ কোটি তিন লাখ ৮৭ হাজার ২৩১ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। চট্টগ্রাম শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপতরের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, বন্ড লাইসেন্সের বিপরীতে পণ্য আনলেও তিন হাজার ৫৬০ টন বিভিন্ন ধরনের কাঁচা পণ্যের খোঁজ মেলেনি গুদামে। এই মালিকের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর শুল্ক ফাঁকির বিষয়ও যাচাই করা হচ্ছে। বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানির শর্ত হচ্ছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচা পণ্য আমদানি করে কারখানায় তৈরি করা পণ্য শতভাগ রপ্তানি করতে হবে। কিন্তু সেই সুবিধার অপব্যবহার করে লিবার্টি এন্টারপ্রাইজ সাড়ে তিন হাজার টন কাঁচামাল আমদানি করলেও তা কারখানায় ব্যবহার না করে বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বন্ড লাইসেন্সের বিপরীতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা পণ্যগুলো হচ্ছে- পোশাক কারখানায় কার্টন তৈরিতে ব্যবহৃত ডুপ্লেক্স বোর্ড, হ্যাঙার তৈরিতে ব্যবহৃত পলিপ্রোপাইলিন সিল, পলিপ্রোপাইলিন ও লো ডেনসিটি পলিপ্রোপাইলিন, পিএস, এলএলডিপিই, বিওপিপি ফিল্ম, থিনার, পলিয়েস্টার রেজিন, স্টাইরিন মনোমার, এরোসিল বা ক্যাবসিল, পার্ল ইসেন্স, কোবাল্ট, পিগমেন্ট, সুইং থ্রেড ও গাম টেপ। তৈরি পোশাক শিল্পের একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, গ্রুপটি দীর্ঘদিন ধরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য এনে বাজারে বিক্রি করে আসছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর