শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
বনানীতে ৫৪ প্লট বরাদ্দে অনিয়ম

বিএনপির ৫৩ প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিয়ম ভেঙে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তৎকালীন রাজউক চেয়ারম্যান, চার সদস্য, পরিচালক (এস্টেট), উপ-পরিচালক (গুলশান-বনানী) ও সংশ্লিষ্ট শাখার লোকজন এ শাস্তির

আওতায় আসছেন। এ ছাড়া অনিয়ম ও তথ্য গোপন করে বনানীতে ২০ বিঘা জমিতে ৫৪টি প্লট বরাদ্দ নেওয়া চারদলীয় জোট সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাতে বনানী থানায় দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে ৫৩ জন প্লট গ্রহীতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মামলা নম্বর-৩০। তবে এরই মধ্যে যারা মারা গেছেন, তাদের নাম বাদ যাবে।

জানা যায়, মোট ৫৮টি প্লট বরাদ্দের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় রাজউক। সেখানে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী, প্রবাসী, শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, শিল্পী, কবি-সাহিত্যিক ও গৃহিণী কোটায় শত শত আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু সব কোটা বাদ দিয়ে শুধু সংসদ সদস্যদের মধ্যে ৫৪টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। বাকি চারটি প্লট সংরক্ষিত রাখা হয়। এ বরাদ্দে রাজউকের নীতিমালা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।

৫৪ প্লট বরাদ্দ পাওয়াদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল নোমান, আবুল খায়ের ভূইয়া, বরকতউল্লাহ বুলু, এম ইলিয়াস আলী (বর্তমানে নিখোঁজ), এ কে এম ফজলুল হক মিলন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মজিবুর রহমান মঞ্জু, মো. কবির হোসেন, সাবিনা শারমিন, হাফিজ ইব্রাহিম, আবদুল মান্নান ভূইয়া, আবুল হোসেন খান, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সামসুজ্জোহা খান, মশিউর রহমান, সেলিমা রহমান, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নরসিংদীর সাবেক এমপি সামসুদ্দিন আহমেদ এছাহাক, এম নাসের রহমান, আখতার হামিদ সিদ্দিকী, মফিকুল হাসান, আলমগীর হায়দার খান, ইমতিয়াজ আহমেদ, খায়রুল কবির খোকন, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, মজিবর রহমান সরোয়ার, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. ফজলুর রহমান, নাজিম উদ্দিন আলম, আসাদুল আশরাফ, শহিদুল আলম, তালুকদার মহিউদ্দিন খান, মেহেদী হাসান, শাহজাহান চৌধুরী, মাসুদা একরাম, তরিকুল ইসলাম, এস এম হাসান রেজা, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা, মীর মো. নাসির উদ্দিন, লুৎফর রহমান খান আজাদ, আলমগীর কবির, হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, আ ন ম এহছানুল হক মিলন, মো. আবদুল হাই, মিজানুর রহমান মিনু, মিসেস সুফিয়া খাতুন, নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আহসান হাবীব ও জাতীয় পার্টির হামিদা বানু শোভা। প্লটগুলো তড়িঘড়ি বরাদ্দ নিয়ে তারা স্থাপনাও নির্মাণ করেছেন বলে জানা যায়। রাজউকের ‘দ্য টাউন ইমপ্র“ভমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৫৩’ ও ‘দ্য ঢাকা ইমপ্র“ভমেন্ট ট্রাস্ট রুলস-১৯৬৯’ অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকায় কোনো ব্যক্তির প্লট বা ফ্ল্যাট থাকলে তারা সরকারিভাবে আর কোনো বরাদ্দ পাবেন না। কেউ তথ্য গোপন করে বরাদ্দ নিলে তার বরাদ্দ বাতিল করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও নীতিমালায় বলা আছে।  ওসি সালাউদ্দিন খান বলেন, ‘মামলার এজাহারে রাজউক থেকে ৫৩টি প্লট বরাদ্দ গ্রহীতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।’ কয়েক বছর আগে বনানীর ২০ বিঘা জমি বরাদ্দের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক মাহমুদ হাসান ৫৪ জন প্লট গ্রহীতার বরাদ্দসংক্রান্ত আবেদনপত্র, বরাদ্দপত্র, অঙ্গীকারনামা, লিজ দলিল, প্লট বরাদ্দসংক্রান্ত নথির ছায়ালিপি, বরাদ্দ নীতিমালার সত্যায়িত কপিসহ সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন। এরপর প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

সর্বশেষ খবর