শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দালালদের উত্পাতে বেসামাল পিরোজপুর সদর হাসপাতাল

তানভীর আহমেদ, পিরোজপুর

দালালদের উত্পাতে বেসামাল পিরোজপুর সদর হাসপাতাল

পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নেই কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। আছে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের উত্পাত। ডিজিটাল এক্সরে মেশিন না থাকার অজুহাতে বন্ধ আছে এক্সরে। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও আল্ট্রাসনোলজিস্ট না থাকায় এ সেবাও বন্ধ। এতে দালালদের অবস্থা হয়েছে পোয়াবারো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিরোজপুর সদর হাসপাতালটি নামেই শুধু আধুনিক হাসপাতাল। ১০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে চিকিত্সক সংকট দীর্ঘদিনের। জেলা সদরের এ হাসপাতালে নেই মেডিসিন, সার্জারি,এনেসথেসিয়ার কোনো বিশেষজ্ঞ। এ তিন বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের ৫টি পদ থাকলেও নেই একজনও। মেডিকেল অফিসার ৯ জনের পদের বিপরীতে রয়েছেন একজন। অন্যান্য বিভাগেও রয়েছে সংকট। হাসপাতালে চিকিত্সকের মোট ৩১ পদের বিপরীতে রয়েছেন ১২ জন। তাদের মধ্যে আবার সময়মতো হাসপাতালে না থাকার অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালে এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রামের মতো সাধারণ সেবাও বন্ধ। ডিজিটাল এক্সরে মেশিন না থাকা ও পুরনো এনালগ মেশিন অকেজো থাকায় হাসপাতালে এক্সরে বন্ধ রয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও চালানোর লোক না থাকায় তা বন্ধ আছে গর্ভবতী মায়েদের জন্য জরুরি এ সেবা। সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিত্সকদের কক্ষে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের ব্যাপক উপস্থিতি। ৯ ডিসেম্বর হাসপাতালের ১১০ নম্বর কক্ষে এক চিকিত্সকের সামনের চেয়ারে বসে সহযোগিতা করছিলেন দুজন। কক্ষে আরও দুজন ঘোরাঘুরি করছিলেন। জানা যায়, তারা কেউ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি, কেউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল।

সম্প্রতি হাসপাতালে এসব দালালের উত্পাত চরম আকার নিয়েছে বলে ওয়াকিবহালরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া হাসপাতালের শিশু বিভাগের এক চিকিত্সকের বিরুদ্ধে হাসপাতালে দেরি করে আসা এবং আগে চলে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কারণ ওই চিকিত্সকের ক্লিনিক রয়েছে। জানা যায়, হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্সই পুরনো। কোনো মতে জোড়াতালি দিয়ে সচল রাখা হয়েছে। হাসপাতালের আরএমও ডা. ননী গোপাল জানান, চিকিত্সক সংকট এই হাসপাতালের অনেক পুরনো সমস্যা। চিকিত্সক ও যন্ত্রপাতি সংকটের বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। দালালদের বিষয়ে তিনি বলেন,  ‘এরা সবাই স্থানীয় হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সমস্যায় পড়তে হয়। তারপরও হাসপাতালের পরিবেশ ঠিক রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও জানান, অন্যান্য জেলার হাসপাতালের চেয়ে পিরোজপুর হাসপাতালের পরিবেশ অনেক ভালো। সিভিল সার্জন ফকরুল আলম জানান, এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও অন্যন্য অসুবিধার কথা লিখিত আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালে দালালদের উত্পাতের বিষয়ে বলেন, ‘এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর