শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

২২ দিন পর খুলল ফেসবুক

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ দিন পর খুলল ফেসবুক

অবশেষে ২২ দিন পর খুলল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে ফেসবুক খুলে দেওয়া হয়। তবে ভাইবার-হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের আরও কয়েকটি মাধ্যম এখনো বন্ধ রয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম দুপুরে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা এই মাত্র আমার হাতে এসেছে। জনগণের সুবিধার জন্য ফেসবুক খুলে দিচ্ছি।’ এ সময় সাংবাদিকদের সামনেই বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদকে ফোন করে ফেসবুক খুলে দিতে নির্দেশ দেন তারানা হালিম। তখন থেকেই চালু হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক। দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা ও পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার ঘটনার পর জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের যোগাযোগের পথ বন্ধ করতে গত ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে বন্ধ করা হয় মোবাইল  ফোনের অ্যাপ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ট্যাংগো ও হ্যাংআউট। আর বিটিআরসির নির্দেশে এ কাজটি করতে গিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রায় দেড় ঘণ্টা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে বাংলাদেশ। ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ এই কষ্ট মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছিলেন, ‘দেশ ও জাতির নিরাপত্তার স্বার্থেই এগুলো বন্ধ করা হয়েছে।’ সরকারের ওই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তরুণ সমাজসহ অনেকেই। ফেসবুকসহ বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যম দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশও হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। গতকাল সাংবাদিকদের তারানা হালিম জানান, জননিরাপত্তার হুমকির মাত্রা যে ধরনের ছিল, সেই মাত্রা অনেকটাই কমে এসেছে। বাকি অ্যাপগুলো যদি কন্ট্রোল করি— হুমকি কন্ট্রোলে রাখতে পারব বলে আশা করছি। এই সময়ে বিকল্প পথে অনেকেই ফেসবুক ব্যবহার করেছেন, যার নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরে সবাইকে সতর্কও করেন তারানা। অবশ্য তরুণদের প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘এদের কোনোভাবেই ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।’ বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে তারানা হালিম বলেন, ‘আমরা ফেসবুক খুলে দেওয়ার জন্য সরকারি নির্দেশনা পেয়েছি। জননিরাপত্তার স্বার্থে ফেসবুক বন্ধ রাখা হয়েছিল। আমার মনে হয় আপাতত সেই সমস্যা কেটে গেছে।’ তরুণ প্রজন্মকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক সময়ের জনপ্রিয় এই টেলিভিশন অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি জানি, তরুণ প্রজন্মের কাছে  ফেসবুক  যোগাযোগের অত্যন্ত প্রিয় মাধ্যম। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’ তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থে কিছুদিন ফেসবুক বন্ধ ছিল। এটি তারা (তরুণ প্রজন্ম) সহূদয়চিত্তে মেনে নিয়েছেন। সে জন্য তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। সাময়িকভাবে ফেসবুক বন্ধের পর যারা সরকারের সমালোচনা করেছেন— তাদেরও ধন্যবাদ। কারণ তারাও আমাদের সাময়িক অসুবিধাকে মেনে নিয়েছেন। তবে ফেসবুকে যারা ব্যবসা করেন জনগণের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে তাদের যে কিছুটা ক্ষতিও হয়েছে। সাময়িক ফেসবুক বন্ধ করে যদি একটা জীবনও বাঁচাতে পারি, সেই কৃতিত্ব সবার।’ তারানা বলেন, ‘আশা করছি ফেসবুক খুলে দেওয়ার পর নাশকতা হবে না।’ এদিকে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ফেসবুক খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। দেশের তরুণদের কথা মাথায় রেখে তিনি  ফেসবুক খুলে দিতে অনুরোধ করেন। বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) ফ্রিল্যান্সিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণরা ফেসবুক না থাকায় সমস্যায় পড়ছিলেন। তাদের কথা মাথায় রেখেই ফেসবুক খুলে দেওয়া হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর