শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বেগুন রঙের শালিক

আলম শাইন

বেগুন রঙের শালিক

বেগুন রঙের বা বেগুনি পিঠ শালিক পান্থ পরিযায়ী পাখি। দেখতে কিছুটা গো-শালিকের মতো। তবে সুদর্শন ও নিরীহ। বাংলাদেশ ছাড়াও এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, মিয়ানমার, দক্ষিণ থাইল্যান্ড, উত্তর-পূর্ব ও মধ্য চীন, জাপান, তাইওয়ান, হংকং, লাওস, কম্বোডিয়া, ইরান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং রাশিয়া পর্যন্ত। বিশ্বে এ প্রজাতিটির অবস্থান মোটামুটি সন্তোষজনক। এ পাখি বন প্রান্তর, মিশ্র বন, বনের কাছাকাছি লোকালয়ে দেখা যায়। ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করে। জোড়ায় জোড়ায়ও দেখা যায়। দেশে সর্বশেষ ২০১৫ সালের এপ্রিলে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে এদের দেখা গেছে। সেখানে প্রায় ৩০-৩৫টি পাখির ঝাঁক বিচরণ করেছে। এর আগে আরও তিনবার এ শালিক নজরে পড়েছে। সর্বপ্রথম দেখা যায় ২০০৯ সালের অক্টোবরে সুন্দরবনের হারবেড়িয়াতে। এদের খাবার তালিকায় প্রথম পছন্দ ছোট পাকা ফল। এ ফলের লোভে এরা গাছে গাছে ওড়ে বেড়ায়। সাধারণত সকালের দিকে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। দুপুরে বিশ্রাম নেয়। কণ্ঠস্বর সু-মধুর। রেগে গেলে ভিন্ন। স্বভাবে খানিকটা লাজুক। তবে কিছুটা অস্থিরমতি। এরা উঁচু বৃক্ষশাখে বা কুঁড়িতে দ্রুততার সঙ্গে খাবার খোঁজে। সব সময় নিজেদের আড়ালে রাখতে পছন্দ করে। প্রজাতিটি হিংস  না হলেও স্বজাতিদের ভিতর মাঝে-মধ্যে বিরোধ বাধায়। সেটি অবশ্য পুরুষত্বের লড়াই। তবে অন্যসব প্রজাতির শালিকদের সঙ্গে এরা মিলেমিশে থাকে।  এ পাখির বাংলা নাম বেগুনি পিঠ শালিক। ইংরেজি নাম পার্পল ব্যাক স্টার্লিং (Purple backed Starling)। বৈজ্ঞানিক নামSturnus  Agropsar। দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৭ সেন্টিমিটার। ওজন ১০০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির মাথার সামনের দিকটা ধূসর, পেছনে রক্তবর্ণ পালক। ঘাড় ধূসর বেগুনি। পিঠ বেগুনি। ডানা সাদা। ডানার প্রান্ত উজ্জ্বল সবুজ-বেগুনি। লেজ সবুজ। দেহতল সাদা। লেজের নিচে হলদেটে। স্ত্রী পাখি পুরুষের তুলনায় নিষ্প্রভ। ঠোঁট কালচে। নিচের ঠোঁটের গোড়ার দিক ফ্যাকাসে। চোখ কালো। পা ধূসর-কালচে। এদের প্রধান খাবার ছোট ফল ও পোকামাকড়। প্রজনন সময় মৌসুম মে-জুন। রাশিয়া অঞ্চলে এরা বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১২-১৪ দিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর