দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ইয়াবার চালান আটক করেছে এলিট ফোর্স র্যাব। ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযানে ২৮ লাখ পিস ইয়াবা বড়িসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা এ যাবৎকাল পর্যন্ত সরকারের অন্য কোনো সংস্থা এত বড় চালান আটক করতে পারেনি বলে দাবি করেছেন র্যাব কর্মকর্তারা। গ্রেফতারকৃত তিনজন হলো— আলী আহম্মদ, মো. মহিউদ্দীন ও হামিদুল্লাহ। এদের মধ্যে আলী আহম্মেদ শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী। গতকাল রাজধানীর উত্তরায় র্যাব সদরদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। র্যাব কর্মকর্তারা জানান, শনিবার গোপন সংবাদ ছিল যে, বার্মিজ এবং দেশীয় চোরাচালানিদের একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী চক্র মাছের ব্যবসার আড়ালে ট্রলারযোগে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান নিয়ে মিয়ানমার থেকে চট্টগ্রামের দিকে আসছে। ঠিক ওই সময় থেকেই সমুদ্রসীমায় ব্যাপক তত্পরতা চালানো হয়। নাম পরিচয়হীন দুটি ট্রলার দেখে সন্দেহ হয় আভিযানিক দলের। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রলার দুটি দুই দিকে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আভিযানিক দলটি ট্রলার দুটিকে ধাওয়া করে একটিকে আটক করতে সমর্থ হয়। রবিবার বিকালে আটককৃত ট্রলার নিয়ে আভিযানিক দলটি পতেঙ্গা উপকূলে ফিরে আসে। ট্রলার তল্লাশি করে ২৭ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয় এবং গ্রেফতার করা হয় চোরাচালান চক্রের প্রধান আলী আহম্মদ ও হামিদ উল্লাহকে। র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সকালে ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় আলীর অপর সহযোগীকে। আলী আহম্মদ ‘একুশে প্রপার্টিজ’ নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির আড়ালে মূলত ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তাকে সহযোগিতা করতেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে অধ্যয়নরত মো. মহিউদ্দিন ও আলীর অফিস সহকারী মো. হামিদ উল্লাহ। প্রধান ইয়াবা সরবরাহকারী বার্মিজ নাগরিক বমংকের কাছ থেকে বার্মিজ নাগরিক আয়াতুল্লাহের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থানরত আলী আহম্মদ সিন্ডিকেট ইয়াবার চালান চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন। আয়াতুল্লাহ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার করা হয় ইয়াবা। আসামিদের সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান, গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান, উপপরিচালক মেজর মাকসুদুল আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।