বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক সমন্বয় প্রধান বাধা

-------অধ্যাপক মলয় কিশোর

রাজনৈতিক সমন্বয় প্রধান বাধা

স্বাধীনতার পর থেকেই অবহেলার শিকার রংপুর। অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দেখেন। সেখানকার উন্নয়নে সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসে। এলাকার উন্নয়নে দলমত-নির্বিশেষে তারা এক কাতারে শামিল হয়। সে ধরনের ঐক্য ও সমন্বয় রংপুরে নেই। কোনো দিন ছিলও না। রাজনৈতিক ঐক্য ও সমন্বয় ছাড়া রংপুরের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে অভিমত দিয়েছেন সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) রংপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি ও অর্থনীতির অধ্যাপক মলয় কিশোর ভট্টাচার্য। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক মলয় কিশোর বলেন, শিল্পের বিকাশ ছাড়া এলাকার উন্নয়ন সম্ভব নয়। রংপুরে উল্লেখযোগ্য শিল্প-কারখানা নেই। গড়েও উঠছে না। পক্ষান্তরে গাদা গাদা ক্লিনিক ও কোচিং সেন্টার গড়ে উঠছে। এসব উন্নয়ন নয়। অর্থনীতির এই অধ্যাপক বলেন, রংপুরের মানুষ বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপারে গিয়ে শিল্প-কারখানা করছে। কিন্তু রংপুরে করছে না। কারণ এখানে নিরাপত্তার অভাব। চাঁদাবাজির ঠেলায় করুণ অবস্থা। উন্নয়নের গতি ফেরাতে হলে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহী করতে হবে। নিরাপত্তা দিতে হবে। ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত ঋণ সরবরাহে আগ্রহী হতে হবে। দেশের অন্য জেলায় চাইলেই ঋণ পাওয়া যায়। রংপুরের বেলায় অনীহা। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোও তেমন উদ্যোগ নেয় না। তারা অনুষ্ঠানমুখী। স্থানীয় রাজনীতিতে কোন্দল, অস্থিরতা। সবাই আখের গোছাতে ব্যস্ত। এলাকায় উন্নয়নের ব্যাপারে কোনো দলের ভূমিকা নেই। উন্নয়নের ব্যাপারে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবেন, ৪৪ বছরে এমন প্রভাবশালী নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। তবে আশার কথা, সিটি করপোরেশন রাস্তাঘাটের অনেক কাজ করছে। শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ১৬ দশমিক ২৪ কিলোমিটার প্রধান সড়ককে চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু অব্যবস্থাপনার অভাবে মানুষ চার লেনের সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। নিবন্ধনহীন অটোরিকশার চাপে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন অটোরিকশা রাস্তায় নামছে। এসব বন্ধ করার উদ্যোগ নেই। পথচারীর ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের দখলে। দখলমুক্ত করার নজির তেমন দেখা যাচ্ছে না। অধ্যাপক মলয় কিশোর বলেন, রংপুরের উন্নয়ন করতে হলে রাজনৈতিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। সন্তান না কাঁদলে মা যেমন দুধ দেন না। তেমনি উন্নয়নের জন্য সরকারকে চাপ দিতে হবে। অর্থ বরাদ্দ আনতে হবে। ভারী শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে হবে। অনেক ব্যবসায়ী বিনিয়োগকারী আছেন এখানে, তাদের আগ্রহী করে তুলতে হবে।

সর্বশেষ খবর