বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজধানীতে মুরগি ও মাছের বিষাক্ত খাবার উৎপাদন

তিন কারখানা বন্ধ পাঁচজনের জেল জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর হাজারীবাগে ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য দ্বারা মুরগি ও মাছের খাবার তৈরির অপরাধে সাতজনকে জেল-জরিমানাসহ তিনটি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল দুপুরে হাজারীবাগ কালোনগর এলাকায় শিপন ফিড মিল, শোয়েব এন্টারপ্রাইজ এবং খলিলের মাছের আউশ কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জয়নাল আবেদিন ও গোলাম সারোয়ারকে তিন মাস করে কারাদণ্ড, জাহাঙ্গীর ও আবুল কালাম আজাদকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে তিন দিনের কারাদণ্ড, কালামকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড এবং নাসির উদ্দিন ও সাইদ শেখকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড।

র‌্যাব-২ এর উপ-পরিচালক ড. মো. দিদারুল আলম জানান, ট্যানারি থেকে চামড়ার বর্জ্য এনে এখানে সিদ্ধ করে ছাদে শুকিয়ে শুঁটকি বানান তারা। এ শুঁটকি ১৭ টাকা কেজি হিসেবে পাইকারি বিক্রি করেন এবং গুঁড়া করে ফিড তৈরি করা হয়। তাদের কাছ থেকে শুঁটকি কিনে বিভিন্ন ব্যক্তি ক্ষতিকর ফিড তৈরি করছে। কয়েক বছর ধরে ওই তিনটি কারখানায় এভাবে ফিড তৈরি হচ্ছে। মুরগি বা মাছের খাবারে ৩০ পিপিএম মাত্রার বেশি ক্রোমিয়াম থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ইতিপূর্বে অভিযানকালে ওই কারখানাগুলোতে উত্পাদিত ফিডে প্রায় ৫ হাজার পিপিএম মাত্রায় ক্রোমিয়াম পাওয়া যায়। এসব ফিডযুক্ত মাছ, মুরগি বা ডিম খেলে মানুষের শরীরে ক্রোমিয়াম প্রবেশ করে এবং মলমূত্রের মাধ্যমে সবটা বের হতে না পেরে শরীরে জমা হতে থাকে এবং নানা রোগ সৃষ্টি করে। যেমন— ক্যান্সার (বিশেষত ফুসফুস ক্যান্সার), টিউমার, পাকস্থলি/ক্ষুদ্রান্ত্র আলসার, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ ইত্যাদি। র্যাব কর্মকর্তা জানান, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন করছে। এসব গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালনে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধের প্রয়োজন হচ্ছে।

এগুলোকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশব্যাপী গড়ে উঠেছে পোলট্রি ফিডের রমরমা ব্যবসা। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে অবৈধ এবং ভেজাল পোলট্রি ফিড, ওষুধ উত্পাদন ও বাজারজাত করছে।

সর্বশেষ খবর