শনিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
সুইডিশ দম্পতির ডলার ছিনতাই

এসআইসহ পাঁচ পুলিশ ক্লোজড

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

ঝিকরগাছায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুইডিশ নাগরিক দম্পতির কাছ থেকে পুলিশের হাতিয়ে নেওয়া তিন হাজার ডলার ফেরত দেওয়া হলেও লিখিত চাওয়া হয়েছে ‘টাকাগুলো পুলিশ নেয়নি’ বলে। তবে তারা এমন লিখিত না দিলেও টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ঝিকরগাছা থানার এসআই এজাজ আহম্মেদসহ পুলিশের পাঁচ সদস্যকে ক্লোজ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জানা গেছে, গত ১৪ ডিসেম্বর তারা দুজন দেশে আসেন। এরপর ১ জানুয়ারি ভারতে বেড়াতে যান খুকুমনি। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরেন। তাকে আনতে যান স্বামী মিজানুর রহমান। দুজনে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে বেনাপোল থেকে নড়াইলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে যশোর-বেনাপোল সড়কের ঝিকরগাছার পাঁচপুকুর নামক স্থানে পুলিশের একটি টিম চেকিংয়ের নামে তাদের গাড়ি থামায়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে খুকুমনি যশোর প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ‘চেকিংয়ের সময় পুলিশ তার ব্যাগ থেকে তিন হাজার ডলার বের করে নেয় ও হুমকি-ধমকি দেয়।’

বিষয়টি জানাজানি হলে রাতেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তত্পর হয়ে ওঠেন। এরপর ঝিকরগাছা থানার এসআই এজাজসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে যশোর পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ঝিকরগাছা থানার ওসি মোল্লা খবির আহমেদ বলেন, বিনা অনুমতিতে তল্লাশি চৌকি বসানোয় ওই পাঁচজনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। অন্য চার পুলিশ সদস্য হলেন কনস্টেবল আজিজুর রহমান, মামুন হোসেন, বাবর আলী ও জিয়াউল হাসান। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেছেন, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে গতকাল বিকালে সুইডিশ নাগরিক মিজানুর রহমান নড়াইল থেকে মুঠোফোনে জানান, ‘ভোরে পুলিশের এক সদস্য ফোন করে আমার বাড়িতে আসতে চান। আমি অসম্মতি জানালে কিছুক্ষণ পর এক যুবক মোটরসাইকেলে বাড়িতে এসে একটি খামে করে তিন হাজার ডলার ফেরত দেন। যুবকটি জানায়, দারোগা স্যার আপনাকে এই ডলার দিতে বলেছেন। এরপর যুবকটি একটি সাদা কাগজ বের করে বলেন, এখানে একটু লিখে দেন যে, আপনাদের ডলার পুলিশ নেয়নি, বাড়ি ফিরে ব্যাগেই ডলারগুলো পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে পুলিশ জড়িত নয়। এসব লিখতে অস্বীকৃতি জানালে যুবকটি চলে যায়। পরে লোহাগড়া থেকে আরও দুই ব্যক্তি তাদের বাড়িতে যান এবং ওই একই কথা লিখিত আকারে দেওয়ার জন্য অনুনয়-বিনয় করেন। তারা বলেন, ডলার আত্মসাতের ঘটনায় পুলিশ দায়ী নয়— এ কথা লিখিত আকারে না দিলে ওই পুলিশ সদস্যদের চাকরি থাকবে না। কিন্তু তিনি এ দফায়ও মিথ্যা কথা লিখতে অস্বীকৃতি জানান।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর