শনিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

অপরিকল্পিত নগরায়ণ প্রধান সমস্যা

------আবির-উল-জব্বার

অপরিকল্পিত নগরায়ণ প্রধান সমস্যা

অপরিকল্পিত নগরায়ণ খুলনা মহানগরীর বড় সমস্যা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, লবণাক্ততা, যানজট, জোয়ারের সময় শহরে পানি ঢুকে যাওয়াসহ নানা সমস্যা রয়েছে এখানে। কিন্তু এসব জটিলতা নিরসনে খুলনা ওয়াসা, কেডিএ (খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং বিটিসিএল পৃথক ভূমিকা নেয়। সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে সংকট নিরসন তো হয়ই না, বরং বাড়তি জটিলতার সৃষ্টি করে। খুলনার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের ক্ষেত্রে ‘অপরিকল্পিত নগরায়ণ’কে তাই বড় বাধা মনে করেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) নগর পরিকল্পনাবিদ আবির-উল-জব্বার। এই নগর পরিকল্পনাবিদের মতে, মহানগরীর পরিকল্পিত উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেডিএ-কেসিসির বড় ধরনের সমন্বয় প্রয়োজন। কিন্তু বিগত সময়ে তা কখনো হয়নি। তিনি বলেন, কেডিএ নগরীর নিরালা ও মুজগুন্নি আবাসিক এলাকা তৈরি করেছে। কিন্তু ময়লা-আবর্জনা অপসারণে এখানে জায়গা রাখেনি। নিরালা-মুজগুন্নিতে খালগুলো ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করেছে কেডিএ। ভবনের উচ্চতা অনুসারে ড্রেনগুলো প্রশস্ত করা হয়নি। ফলে বর্ষার সময় এসব জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, আর দোষ হয় সিটি করপোরেশনের। আবির-উল-জব্বার বলেন, আবাসিক এলাকার মধ্য দিয়ে কোনো মহাসড়ক যেতে পারে না। এটি প্লানিং রুলের পরিপন্থী। কিন্তু মুজগুন্নি আবাসিকের ক্ষেত্রে তা-ই করেছে কেডিএ। উপযুক্ত পরিকল্পনার পরিবর্তে তারা অপরিকল্পিত নগর গড়ে তুলছে, যা সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তিনি বলেন, একইভাবে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে (সড়ক ও জনপথ বিভাগ) খুলনা শহরে তাদের প্রায় ১৮ কিলোমিটার মহাসড়কের জায়গা রয়েছে বলে দাবি করছে। শহরের এসব জায়গায় সিটি করপোরেশনের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজেও তারা বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, সমন্বিত পরিকল্পনা না হলে ওয়াসা কখনো রাস্তা কাটবে পাইপ বসাবে। বিটিসিএল কখনো রাস্তা কাটবে পাইপ বসাবে। পুলিশ বিভাগ হঠাত্ রাস্তা বন্ধ করে দেবে। কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। খুলনার এই নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে শহরে ইতিপূর্বে যেসব ড্রেন তৈরি করা হয়েছিল, এর কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ময়ূর নদীর সঙ্গে যে ২২টি আউটলেট রয়েছে, সে পর্যন্ত ড্রেনগুলো যে স্লোভে যাওয়ার কথা তা মানা হয়নি। এ অবস্থা নিরসনে প্রায় ৭০ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ছাড়া নদীর সঙ্গে যুক্ত গেটগুলোতে পাম্পহাউস করা হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে বৃষ্টির সময় নদীর পানি শহরের তুলনায় উঁচু হয়ে গেলে গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরে পাম্প করে শহরের পানি ফেলা হবে নদীতে। যানজট নিরসনেও গুরুত্বপূর্ণ ২৬টি মোড় সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর