শনিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে উঁচু ম্যুরাল

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে উঁচু ম্যুরাল

হে জাতির জনক! তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ— এ স্লোগান দিয়ে চট্টগ্রামে বসানো হয়েছে দেশের সবচেয়ে উঁচু ত্রিকোণাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল। নগরীর অক্সিজেন মোড় থেকে কুয়াইশ পর্যন্ত সড়কের নামকরণ হয়েছে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। এ সড়কের দুই মাথায় অক্সিজেন মোড়ে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ত্রিকোণাকার ম্যুরালের উচ্চতা ২৬ ফুট আর কুয়াইশ মোড়ে এ ম্যুরালের উচ্চতা ৪২ ফুট। উভয় স্থানে তিন দিকেই রয়েছে ম্যুরাল। মার্বেল পাথরের তৈরি ম্যুরাল দুটি নির্মাণ করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) খরচ হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এটি দেশে বঙ্গবন্ধুর সর্বোচ্চ ম্যুরাল দাবি সংশ্লিষ্টদের। আজ বঙ্গবন্ধুর এ ম্যুরালটিসহ মোট ছয়টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ছয় দফার ঘোষণা দিয়েছিলেন চট্টগ্রামে। তার পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন এ চট্টগ্রামকেই। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এর আগে প্রধানমন্ত্রী যতগুলো প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন এর সব কটির কাজ শেষ হয়েছে।

 ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের উদ্বোধনের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি হচ্ছে ব্যতিক্রম।

এটি দেশের সবচেয়ে উঁচু। এর চেয়ে উঁচু কোনো ম্যুরাল দেশে নেই। অক্সিজেন ও কুয়াইশ পয়েন্টে তিনটি করে ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, কুয়াইশ মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের পাশে সিডিএ’র ছয় প্রকল্পের ফলক রাখা হয়েছে। একসঙ্গেই প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নে ৬৫ লাখ নগরবাসী ও সাংবাদিকের পাশাপাশি সরকারি-আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাও সহযোগিতা করেছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রাখতে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিকমানের জাদুঘর করারও পরিকল্পনা আছে। এতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা একনজরে বঙ্গবন্ধুকে জানতে পারেন বলে তিনি জানান। অক্সিজেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আজাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সড়কটি চট্টগ্রামের চেহারাও পাল্টে দিয়েছে। মনে হচ্ছে বিদেশি একটি সড়ক। একই সঙ্গে অক্সিজেন ও কুয়াইশ মোড়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ত্রিকোণাকার দুটি ম্যুরালও। এ সড়ক ও ম্যুরাল দুটি দেখার জন্য আসছেন বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরাও। এ ছাড়া প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এ সড়কের সুফল ভোগ করবেন বলে জানান তিনি। একই কথা বললেন স্থানীয় রিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন কাদের লাভলু। সিডিএ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ নানা দিক বিবেচনা করে চট্টগ্রামের মানুষের গর্ব করার মতো অনেক কিছুই রয়েছে। সে তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশের সবচেয়ে উঁচু ম্যুরাল। চট্টগ্রাম হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত প্রিয় স্থান এবং বিশ্বাসের জায়গা। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় সহচর ছিলেন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী, এম এ আজিজ, এম এ হান্নান প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ছয় দফার ঘোষণা দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম থেকে। তার পক্ষে স্বাধীন?তার ঘোষণাপত্র পাঠ করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন চট্টগ্রামকে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত চট্টগ্রামের মানুষ স্বাধীনতার পরপরই জিন্নাহ সড়ককে শেখ মুজিব সড়কে নামকরণ করে। ৪৪ বছর পর এসে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পরিকল্পিতভাবে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৬০ ফুট প্রস্থের চার লেনের একটি সড়ক নির্মাণ করে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ নামকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে দেশের সু-উচ্চ ম্যুরালও স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। এ ছাড়া হাটহাজারীর কুয়াইশ, বুড়িশ্চর, কাপ্তাই, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, পটিয়া, সাতকানিয়াসহ চট্টগ্রামের ৫০ লাখ মানুষ এ সড়কের সুফল ভোগ করবেন। বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লুপ রোডটি (বাইপাস) যদি হয়ে যায় তবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ হয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ মূল শহর এড়িয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াত করতে পারবেন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ৪০৫তম বোর্ড সভায় সড়কটি বঙ্গবন্ধু এভিনিউ নামকরণ করা হয়। ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর সিডিএ’র ৪০৭তম বোর্ড সভায় সড়কটির দুই প্রান্তে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ছবিসংবলিত দুটি সুদৃশ্য ম্যুরাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর সিডিএ’র স্থাপত্য বিভাগের নকশা অনুযায়ী অক্সিজেন ও কুয়াইশ জংশনে বঙ্গবন্ধুর ত্রিকোণাকৃতির ম্যুরাল দুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শিল্পনির্দেশক ছিলেন ভাস্কর সৌরভ জাহান ও দীপক। রাতের বেলা আকর্ষণীয় আলোক প্রক্ষেপণ ব্যবস্থা থাকছে ম্যুরালে।

সর্বশেষ খবর