শনিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

নবাবগঞ্জের প্রাচীন কীর্তি সীতাকোর্ট

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

নবাবগঞ্জের প্রাচীন কীর্তি সীতাকোর্ট

নবাবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক নিদর্শনের একটি হলো সীতাকোর্ট বৌদ্ধ বিহার। পঞ্চম শতাব্দীর আগে নির্মিত এ বিহার নিয়ে জনশ্রুতি আছে— রামের স্ত্রী সীতা এখানেই বনবাসে ছিলেন, তাই এর নাম সীতাকোর্ট। পরে জানা যায় এটি বৌদ্ধ বিহারও।

দিনাজপুর সদর থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, বিরামপুর থেকে ৪ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে এবং নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার পশ্চিমে বিরামপুরগামী পাকা রাস্তার উত্তর পাশে গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের ফতেপুর মাড়াসপুর গ্রামে এই প্রত্নকীর্তির অবস্থান। এটি প্রায় এক একর আয়তন বিশিষ্ট ভূমির ওপর অবস্থিত। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দিনাজপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে ১৯৬৮ ও ১৯৭২ সালে আংশিক খননের পর দেখা গেছে এটি শুধু সীতার কুঠরিই ছিল না, ছিল প্রচীন একটি বৌদ্ধ বিহার। এ বিহার পূর্ব-পশ্চিমে লম্বায় ২১৪ ফুট, উত্তর দক্ষিণে প্রস্থ ২১২ ফুট। শৌচাগার ছাড়া ছোট বড় কক্ষের সংখ্যা ৪১টি। বেষ্টনীপ্রাচীর চওড়ায় সাড়ে ৮ ফুট, সামনের প্রাচীর ৫ ফুট, বারান্দা ৮ ফুট ও বারান্দার সামনের প্রাচীর ৫ ফুট। ভিতরের আঙিনা ১৩৯-১৩৫ ফুট আয়তনের। কক্ষে প্রবেশের পথ ৩ থেকে ৫ ফুট প্রশস্ত। কক্ষগুলো ১১-২২ থেকে ১১-১১ ফুট আয়তনের।

মূল প্রবেশ পথ উত্তর দিকে। পথের দুই পাশে পাশাপাশি দুটি করে চারটি ছোট কক্ষ রয়েছে। বিভক্ত প্রাচীরের প্রশস্ততা ১৩ ফুট, ৫ ফুট ও ৪ ফুট। বর্তমানে বিহারটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে আবিষ্কৃত অন্যসব বিহারের চেয়েও এটি প্রাচীন। নির্মাণ শৈলী দেখে অনুমান করা হয়, এ বিহার পঞ্চম শতাব্দী কিংবা তারও আগে নির্মিত হয়েছিল। এই বিহারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা গেছে, ভিতরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে যে কটি কূপ ছিল, সেটি ভরাট হয়ে গেছে। বাইরে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে পাশাপাশি অবস্থিত ৫টি কুঠরি এখনো আছে। মূলত এটি এখন সংরক্ষণের অভাবে বেহাল দশায় রয়েছে। স্থানীয় অনেকেই মনে করেন, বিহারটিকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ প্রয়োজন। তাহলে শুধু প্রাচীন ঐতিহ্যকেই সংরক্ষণ করা হবে না, পর্যটকদের কাছেও দর্শনীয় স্থান করে তোলা যাবে।

সর্বশেষ খবর