রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

আলু চাষে কৃষক হাসে

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

আলু চাষে কৃষক হাসে

পরপর গেল দুবছর লোকসান দেওয়ার পর এবার লাভের মুখ দেখছেন রংপুরের আলু চাষিরা। আলুর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। কষ্ট সার্থক হওয়ায় আলু চাষির মুখে হাসি ফুটেছে।

রংপুরের মাঠজুড়ে এখন আলু তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষক-কৃষাণীরা। একর প্রতি ১৪০-১৬০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৮৪ কেজি) আলু উত্পাদিত হয়েছে। বাজারে ডায়মন্ড জাতের আলু প্রতি বস্তা ৮০০, গ্র্যানুলা জাতের ৭৫০ ও কার্ডিনাল জাতের আলু ৭০০ টাকা বস্তা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজিজুল্লাহ গ্রামের আলু চাষি মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘গত বছর লাভের আশায় তিন একর জমিতে আলু বুনে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করেছি। ৪-৫ টাকা কেজি দরে আলু বেচে ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা লোকসান গুণেছি। তার আগের বছর ১ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে ৪ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে’। তিনি বলেন, ‘লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার আশায় এ বছরও ৩ একর জমিতে কার্ডিনাল ও গ্র্যানুলা জাতের আলু বুনেছি। আলু পেয়েছি ৪৮০ বস্তা। তিন একর জমিতে আলু চাষ করতে খরচ হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার টাকা। ৮৪ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা আলু ৭০০-৮০০ টাকা দরে বিক্রি করে ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা পেয়েছি’।  পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের দেউতি গ্রামের কৃষক খয়বর আলী জানালেন, ‘রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থাকি ঋণ নিয়া ১০ একর জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করচি। ফলনও ভালো হইচে। আরও দাম বাড়বে এই আশায় আলু তুলি ঘরোত রাখি দিচি’। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে দাম সেই দামে আলু ব্যাচাইলে ঋণের টাকা শোধ করিয়াও অনেক টাকা লাভ হইবে’।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শ ম আশরাফ আলী বলেন, চলতি বছর জেলার আট উপজেলায় ৪৮ হাজার ৫৬৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করে ৯ লাখ ৪৮ হাজার ৫৬৮ মেট্রিক টন আলু উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। একরে সাড়ে ১৯ মেট্রিক টন আলু উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ফলন হয়েছে সাড়ে ২০ মেট্রিক টন।

তিনি আরও জানালেন, এ বছর জমি তৈরি, বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ও আলু উত্তোলন পর্যন্ত একরে খরচ পড়েছে ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা। এ হিসেবে এক কেজি আলুর উত্পাদন খরচ পড়েছে ৭ টাকা ২৫ পয়সা। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে পৌনে ৯ টাকা থেকে সাড়ে ৯ টাকা দরে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর