মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুষ্ঠু নির্বাচনে চরম ব্যর্থ ইসি : সুজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুশাসনের জন্য নাগরিক— সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন-ইসি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কমিশন বলেছে, তারা ব্যর্থতার দায় নেবে না। এখন কমিশন যদি দায় না নেয় এ দায় কে নেবে?। তার মতে, নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের যে হার তাই এ নির্বাচনকে বিকৃত নির্বাচন বলাই স্বাভাবিক। প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা রোধে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি গণমাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমাদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হলেও কমিশন যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সুজন আয়োজিত ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন : দৃশ্যপট ও শিক্ষণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন। এতে আরও বক্তব্য দেন সুজন সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, নির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী মুসবাহ আলীম, সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এই নির্বাচনকে বিকৃত বলার প্রধান তিনটি কারণ রয়েছে, যা প্রথমত, এতকাল মনোনয়ন বাণিজ্য ছিল উপরতলায়, এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়েছে তৃণমূল পর্যন্ত। দ্বিতীয়ত, এবারের নির্বাচনে সহিংসতার মাত্রা নিকট অতীতের সব নির্বাচনের সহিংসতার মাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকট। এবার সহিংসতার ধরনও ভিন্ন। আগে নির্বাচনের দিনে সহিংসতা ঘটত, কিন্তু এবার সহিংসতা দীর্ঘমেয়াদি এবং সহিংসতা দেখা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের মধ্যে বেশি। তৃতীয়ত, নির্বাচন মানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন, কিন্তু এবারের নির্বাচন ছিল প্রায় প্রতিযোগিতাহীন। দ্বিতীয় দফা নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য তিনি ইসিকে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সাল পর্যন্ত নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এবার আবার সহিংসতা হয়েছে এবং এতে এ পর্যন্ত ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হয়নি। সে জন্য মানুষ নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এটি মঙ্গলজনক নয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। দিলীপ কুমার সরকার বলেন, “গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সবচেয়ে বড় দায় নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী তারাই। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা তাদেরই দায়িত্ব। আমরা এও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রণীত আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূল দলিল পবিত্র সংবিধানে ‘গণতন্ত্র’কে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আর নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথম ধাপ। তাই কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন পদ্ধতিকে ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না।” প্রথম দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে একটি বিকৃত নির্বাচন বলে অভিহিত করে জাকির হোসেন বলেন, ‘সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা দেখেছি যে, কেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের যে মহোৎসব দেখা দিয়েছে তা একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতার প্রভাবের কারণেই ঘটেছে। সুতরাং আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায়বদ্ধতার পরিচয় দিতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর