সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিজিবির শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার প্রস্তাব ফাইলবন্দী

নানা সীমাবদ্ধতায় থমকে আছে সব

আনিস রহমান

প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত সিদ্ধান্তের পরও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবির সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যেতে পারছেন না। প্রায় দুই বছর ধরে বিজিবির এই প্রস্তাব আটকে আছে মন্ত্রণালয়ে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিজিবির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশের সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে সহায়তার ক্ষেত্রে বিজিবি প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। এই বাহিনী তার কর্মদক্ষতা প্রমাণ করে একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাই সমজাতীয় অন্যান্য বাহিনীর মতো বিজিবি সদস্যদেরও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার সদিচ্ছা ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে সীমাবদ্ধতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। জানা গেছে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য কন্টিনজেন্টের ক্যাটাগরি ও জনবল নির্ধারণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিপিকেএমও (ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং মিশন অপারেশন) কর্তৃক এ যাবৎ চাহিদার তালিকায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ছিল না। ফলে সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিজিবিকে আজ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো সম্ভব হয়নি। ফর্মড পুলিশ ইউনিট জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন চলমান দেশগুলোতে অভ্যন্তরীণ শান্তি তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ওইসব দেশের সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে প্রশিক্ষিত করার দায়িত্বপ্রাপ্ত কন্টিনজেন্টের একমাত্র স্বীকৃত মডেল হিসেবে পরিগণিত। পাশের দেশ ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের একটি করে কোম্পানি সংখ্যক জনবল (১৪০ জন) দুটি কন্টিনজেন্ট বর্তমানে হাইতি এবং কঙ্গোতে এই মডেলেই মোতায়েন রয়েছে। এরা বিগত ২০০৮ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করে আসছে। বিএসএফের মতো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরাও নিজ নিজ দেশে সীমান্ত রক্ষাসহ চোরাচালান, মাদক পাচার এবং অন্যান্য আন্তঃ সীমান্ত অপরাধ দমনে একই ধরনের দায়িত্ব পালন করে আসছে। পাশাপাশি এই বাহিনী সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা-নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে যুগপত্ভাবে সফল ভূমিকা পালনের মাধ্যমে উল্লিখিত ফর্মড পুলিশ ইউনিটের ম্যান্ডেট পালনে পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের একাধিক কন্টিনজেন্ট ফর্মড পুলিশ ইউনিট হিসেবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অত্যন্ত সফলতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। পুলিশের চলমান কন্টিনজেন্টের চাহিদা বিদ্যমান রেখে বিজিবি সদস্যদের জন্য অতিরিক্ত একাধিক কন্টিনজেন্টের চাহিদা ডিপিকেএমও-তে পাঠানো যেতে পারে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফর্মড পুলিশ ইউনিট কন্টিনজেন্ট হিসেবে বিজিবি সদস্যদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কন্টিনজেন্টের চাহিদা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের মাধ্যমে ডিপিকেএমও-তে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশেষভাবে অনুরোধও করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর