সুতি কাবাব, জালি কাবাব, টিকা কাবাব, আস্ত মুরগির কাবাব, বঁটিকাবাব, কোফতা, মোরগ পোলাও, কবুতর ও কোয়েলের রোস্ট, খাসির রানের রোস্ট, দইবড়া, মোল্লার হালিমসহ বিভিন্ন প্রকারের বাহারি ইফতার শত বছর ধরে ঢাকাবাসীর ইফতারির অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে সমাদৃত হয়ে আসছে। রোজা শেষে মজাদার ও লোভনীয় খাবার দিয়ে ইফতার করতে পুরান ঢাকার বাসিন্দারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
ঢাকাবাসীর ইফতারির মধ্যে আরও রয়েছে—তেহারি, কাচ্চি, মুরগি টিক্কা, মাছের কোপ্তা, শাকপুলি, চিকেন কাঠি, শামি কাবাব, শিকের ভারী কাবাব, ডিম চপ, নুরানি লাচ্ছি, পনির, পেস্তা বাদামের শরবত, ছানামাঠা, কিমা পরটা, ছোলা, মুড়ি, ঘুমনি, বেগুনি, আলুর চপ, জালি কাবাব, পিয়াজু, শাহী জিলাপি। এ ছাড়াও রয়েছে আনারস-বিলেতি গাব, পিঠা-পায়েস, শরবত, মিষ্টিসহ বিভিন্ন প্রকারের ফল। পুরান ঢাকার বিখ্যাত বিরিয়ানি তো রয়েছেই। আজিমপুর, লালবাগ, সদরঘাট, বাবুবাজার, নবাবপুর রোড, চকবাজার, ওয়ারি, চানখাঁরপুল, মিটফোর্ড, আরমানীটোলা, কোর্ট-কাচারিসহ বিভিন্ন এলাকায় রমজান মাসে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। দুপুরের পর থেকেই এসব দোকানগুলোতে বিকিকিনি শুরু হয়। এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে নানা মুখরোচক খাবার। পুরান ঢাকার খাসির হালিম বেশ জনপ্রিয়। ইফতারের অন্যান্য পদের মধ্যে শাহী জিলাপির বেশ নামডাক রয়েছে। বিভিন্ন ফলের রস দিয়ে তৈরি পানীয় ছাড়াও সারা দিন রোজা রেখে তৃষ্ণার্ত ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শরবত।
এ ব্যাপারে হাজারীবাগের বাসিন্দা মো. সোহেল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পুরান ঢাকার বাসিন্দারা ভোজনবিলাসী। ফলে তারা বিভিন্ন প্রকারের লোভনীয় খাবার দিয়ে ইফতারি করতে পছন্দ করেন। মো. শিশির বলেন, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ইফতার ঢাকাবাসী আজও ধরে রেখেছেন। রোজা শেষে মজাদার খাবার দিয়ে ইফতার করতে পুরান ঢাকার বাসিন্দারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ইফতারির দাম তুলনামূলক এবার কিছুটা বেড়েছে। তার মধ্যে মুরগির রোস্ট ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কোয়েল পাখির রোস্ট ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শাহি হালিম বড় হাঁড়ি ৩৫০ ও ছোট হাঁড়ি ১৫০ টাকা, টারকি বিফ ২০০ টাকা, কাশ্মীরি শরবত প্রতি লিটার ২০০ টাকা, নিমকপারা প্রতিপিস ২০ টাকা, মুঠি কাবাব প্রতিটি ২০ টাকা, অ্যারাবিয়ান কাবাব প্রতিটি ৮০ টাকা, ২০টি দই-বড়ার বাটি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, ১০টি দই-বড়ার বাটি ১২০ টাকা, ৫টি দই-বড়ার বাটি ৬০ টাকা, ডিম চপ প্রতিপিস ১৫ টাকা, কচুরি ২০টি ৩৫ টাকা, ফুল্লরি তিপিস ২ টাকা, সমুচা প্রতি পিস ৫ থেকে ১০ টাকা, পনির সমুচা প্রতি পিস ৫ টাকা, পিয়াজু প্রতি পিস ৪ থেকে ৫ টাকা, আলুর চপ পিস ৫ টাকা, বেগুনি পিস ৪ থেকে ৫ টাকা, ছোলা প্রতিকেজি ১৩০ টাকা, ডাবলি প্রতিকেজি ৫০ টাকা, সাসলিক পিস ৩০ টাকা, জিলাপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৬০-১৭০ টাকা। জালি-কাবাব, টিকা-কাবাব, সুতি-কাবাব ইত্যাদি লোভনীয় খাবারে ভরপুর থাকে পুরান ঢাকার ইফতারি বাজার। জালি-কাবাবের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, খাসির কাবাব ৫০ টাকা, টিক্কা ৪০ টাকা এবং সুতি-কাবাবের দাম প্রতিটি ১২৫ টাকা। আরও অসংখ্য মুখরোচক খাদ্যপণ্য বেশ সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরু ও খাসির এক কেজি সুতি-কাবাব ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি বাটি খাসির হালিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়। বড় চাকতি আকৃতির শাহী জিলাপির দাম কেজি প্রতি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা।