শনিবার, ২৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাত-দিন কর্মযজ্ঞ খলিফাপট্টিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

রাত-দিন কর্মযজ্ঞ খলিফাপট্টিতে

ছোট ছোট কক্ষে সেলাই মেশিন আর ৭/৮ জন কর্মচারী। কেউ কাপড় কাটছে, কেউ সেলাইয়ে আবার কেউ কাপড় ইস্ত্রিতে ব্যস্ত। কারওই যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। সবাই রাত-দিন নিজ দায়িত্ব পালন নিয়ে ব্যস্ত। এ চিত্র চট্টগ্রামের দর্জিপাড়া হিসেবে খ্যাত খলিফাপট্টির। এখানে সাড়ে চার শতাধিক কারখানার     প্রায় চার হাজার শ্রমিক ব্যস্ত ঈদের পোশাক তৈরিতে। খলিফাপট্টি বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন,

‘শুরুতে মন্দাভাব থাকলেও এখন প্রত্যাশিত অর্ডার পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শেষ কয়েকদিন আরও ব্যবসা বাড়বে। তবে ব্যবসায়ীদের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যুৎ। দিনে অসংখ্যবার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করায় ব্যবসায়ীরা অর্ডার সরবরাহ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।’ খলিফাপট্টির পোশাক তৈরির কারখানাগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে কম দামে আধুনিক ডিজাইনের পোশাক তৈরি। এখানের কারখানাগুলোতে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা দামের পোশাক তৈরি হয়। এমনকি বিদেশি অত্যাধুনিক ডিজাইনের অবিকল স্যুট, শার্ট, প্যান্ট, থ্রিপিস, লেহেঙ্গা ও স্কার্ট তৈরি করেন খলিফাপট্টির ডিজাইন মাস্টাররা। খলিফা পট্টির ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের অন্যান্য সময় চীন ও ভারত থেকে বেশি পরিমাণ তৈরি পোশাক আমদানি হওয়ায় খলিফা পট্টিতে তৈরি পোশাকের চাহিদা কম। ফলে বছরের বেশির ভাগ সময় কর্মহীন থাকতে হয় শ্রমিকদের। তবে ঈদ সামনে রেখে কর্মচঞ্চল থাকে খলিফাপট্টি। ব্যবসায়িক ঐতিহ্যের এ খলিফাপট্টিতে গত কয়েক বছরে বন্ধ হয়ে গেছে পঞ্চাশটিরও বেশি কারখানা। তাই বিভিন্ন সুবিধাসহ বিশেষ অঞ্চল চেয়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

খলিফাপট্টির এস এম ফ্যাশনের প্রোপ্রাইটর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর অন্য বছরের মতো অর্ডার পাইনি। যা পেয়েছি তার দিনে পাঁচ-ছয়বার বিদ্যুৎ যাওয়ার কারণে কাপড় সরবরাহ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’ জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর আইয়ুব আলী সওদাগর নামে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এক দর্জি নগরীর ঘাট ফরহাদবেগের তৈরি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে ব্যবসা প্রসারিত হয়ে এলাকাটি খলিফাপট্টি নামে পরিচিত হয়। এখানকার বেশির ভাগ ব্যবসায়ী-শ্রমিক নোয়াখালী অঞ্চলের। এক সময় প্রায় হাজারের মতো পোশাক তৈরির কারখানা ছিল খলিফাপট্টিতে। বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৪৫০-এ।

সর্বশেষ খবর