রাজধানীর বাড্ডায় গারো তরুণী ধর্ষণের মূল হোতা রাফসান হোসেন রুবেলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে র্যাব-১-এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল ওই তরুণীকে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব। ২৫ অক্টোবর বাড্ডার ৩ নম্বর লেনের হাসান উদ্দীন সড়কের একটি বাসায় ওই গারো তরুণীকে আল আমিন, সালাউদ্দিন সালুসহ কয়েকজনের সহায়তায় ধর্ষণ করেন রুবেল। ২৮ অক্টোবর ওই তরুণী বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মামলা করেন।
গতকাল কারওয়ান বাজারে বিএসইসি ভবনে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ জানান, রুবেল বাড্ডা এলাকার চিহ্নিত অপরাধী। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে বাড্ডা, রামপুরা থানায় নয়টি চাঁদাবাজি, অস্ত্র, ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলা পাওয়া গেছে। রুবেল ও তার সহযোগীরা সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে বখরা হাতিয়ে নিতেন। র্যাব-১ অধিনায়ক আরও বলেন, ২৫ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ওই গারো তরুণী তার হবু স্বামী রিপন ম্রংয়ের সঙ্গে দেখা করতে বাড্ডার হাসান উদ্দীন সড়কে হাজী রুহুল আমিনের মেসে গিয়েছিলেন। ওইদিন মেসের ম্যানেজার হানিফ মেসে অবস্থানরত অন্য ভাড়াটিয়া নাজমুল, সালাউদ্দীন সালু, জয়নাল, আল আমিন ও রনির উপস্থিতিতে রিপন ম্রংকে বলেন, ‘মেসে মহিলা আনা নিষেধ, তুমি কেন এখানে মহিলা নিয়ে আসছ।’ এজন্য তিনি রিপন ম্রংকে ১ নভেম্বরের মধ্যে মেস ছাড়ার নির্দেশ দেন। একই সময়ে মেসের বাসিন্দা সালাউদ্দিন সালু ফোনে রুবেলকে মেসে ডেকে আনেন। তার সঙ্গে আসে সন্ত্রাসী আল আমিন, রনি, সুমন ও নাজমুল। তারা রিপন ম্রংয়ের কাছে মহিলা আসার কথিত অপরাধের দফারফা করার অজুহাতে ম্রংয়ের কাছে থাকা ১৭ হাজার টাকা এবং তার ব্যবহূত স্মার্টফোনটি ছিনিয়ে নেন। কিছু সময় পর রুবেল ও তার সহযোগীরা ওই তরুণীকে পাশের পারভেজের রিকশার গ্যারেজের পাশে হাজী মোশারফ মিয়ার পরিত্যক্ত বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন। স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ধর্ষক রুবেল বাড্ডা ও রামপুরা থানা এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রধারী, চাঁদাবাজ, অপহরণকারী, ধর্ষক, ডাকাত ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রায়ই তার সহযোগীদের নিয়ে নির্জন রাস্তায় চলাচলরত মেয়েদের সুযোগ বুঝে উত্ত্যক্তসহ ধর্ষণ করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উত্ত্যক্ত ও ধর্ষণের শিকার মেয়েরা লোকলজ্জা ও প্রাণের ভয়ে এ ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদ বা আইনের সহায়তা নিতে পারে না। অনেক সময় বহিরাগত কিংবা স্থানীয় কোনো যুবক-যুবতী একসঙ্গে বাড্ডা এলাকায় বেড়াতে গেলে ধর্ষক রুবেল তাদের ফাঁদে ফেলে বা জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নেন; এমনকি ধর্ষণ করেন।