জাতীয় সংসদের এমপিদের জন্য ৭ভাগ ও সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১৮ ভাগ কোটা রেখে প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালার সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে সংসদীয় কমিটি। দুই বছর ধরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে সংসদীয় সাব কমিটি এ বিষয়ে তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। পরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সাব কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশাজীবীদের জন্য নির্ধারিত হারে প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা সংস্কার ও বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছে। সংসদীয় কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা যায়, কমিটি রাজউকের জন্য নিম্নোক্ত হারে প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ ক্যাটাগরি ও কোটা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে এমপিদের জন্য ৭ শতাংশ, সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১৮ শতাংশ, আধা-সরকারি / স্বায়ত্তশাসিত কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ, বেসরকারি সেবা প্রদানকারীদের জন্য ৫ শতাংশ, অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ৬ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা/ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৫ শতাংশ, ব্যবসায়ী/শিল্পপতিদের জন্য ৬ শতাংশ, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের জন্য ২ শতাংশ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউক কর্মচারীদের ৬ শতাংশ, অর্থ বিভাগ/আইএমইডি/ পরিকল্পনা কমিশনের কর্মচারীদের জন্য ১ শতাংশ, জাতীয় সংসদের কর্মকর্তাদের জন্য ২ শতাংশ, আক্রান্ত মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ, বিশেষ পেশা যথা সাংবাদিক, শিল্পী, আইনজীবী, সাহিত্যিক/ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের জন্য ৪ শতাংশ, নারীদের জন্য ৩ শতাংশ, দলিত/ক্লিনারদের জন্য ১ শতাংশ, সংরক্ষিত ২০ শতাংশ, ও অন্যদের জন্য ৪ শতাংশ হারে কোটা বরাদ্দ দেওয়ার নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। এর আগে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দের ক্ষেত্রে এমপিদের কোটা ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ হারে নির্ধারণ করা হয়। সংসদীয় কমিটি স্থান ও এলাকা ভেদে কোনোভাবেই সুপারিশকৃত এ ক্যাটাগরি ও কোটার হার পরিবর্তন না করারও সুপারিশ করে। এছাড়া এ সুপারিশের আলোকে নতুন একটি যুগোপযোগী বরাদ্দ নীতিমালা প্রণয়নেরও সুপারিশ করা হয়। সংসদীয় সাব কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যমান গৃহায়ণ নীতিমালায় এমপিদের জন্য প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দের উল্লেখ নেই। তাই কমিটি মনে করে, আইন প্রণেতাদের জন্য অবশ্যই একটা কোটা থাকা উচিত। এছাড়া সরকারের প্লট ও ফ্ল্যাট পাওয়ার ব্যাপারে অন্য সব পেশাজীবী মানুষের জন্যও একটি সুষ্ঠু বণ্টন নীতিমালা প্রয়োজন। সাব কমিটির পর্যবেক্ষণে শ্রেণী ও পেশা বিভাজিত হারে কোটা পদ্ধতি না থাকার কারণেই রাজউক ও জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। এতে সরকার ও মন্ত্রণালয়ের দুর্নাম হচ্ছে। তাই বিদ্যমান নীতিমালা সংস্কার করে সুপারিশকৃত কোটা প্রথা বাস্তবায়ন করলেই জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতি কমে যাবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ২০১৪ সালের ২০ জুলাই বিদ্যমান প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে চার সদস্যের একটি সাব কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। আবু সালেহ মোহাম্মদ সাঈদ (দুলাল)-এর নেতৃত্বে গঠিত এ কমিটি গত ১০ নভেম্বর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে নতুন ক্যাটাগরি ও কোটার প্রস্তাবসহ প্রতিবেদন জমা দেয়। এর আগে সাব কমিটি ৫ দফা বৈঠক করে প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দের নতুন কোটার শ্রেণিবিন্যাস করে।