সাপাহার গোয়ালা ইউনিয়নের শিয়ালমারী গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের গৃহবধূ তাজকেরা (৪০)। তিনি হোমটেস্ট গার্ডেনিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে বসতবাড়িতে সবজি চাষ শুরু করেন। এরপর বেশ দ্রুতই ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে ফেলেন।
এক সময় অনাহারে অর্ধাহারে থাকলেও এখন তাজকেরা সবজি চাষ করে ৫ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন বেশ আয়েসে। অবশ্য ৩ ছেলের মধ্যে কাউকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তবে সবার ছোট মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। মেয়েকে নিয়েই তিনি অনেক স্বপ্ন দেখছেন। আলাপ করে জানা গেছে, তাজকেরা খাতুনের স্বামী আমানুরের বসতভিটা ছাড়া আবাদি কোনো জায়গা জমি ছিল না। তাই স্বামী দিন মজুরের কাজ ও তাজকেরা ঝি-এর কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। হঠাৎ একদিন গ্রামে বে-সরকারি সংগঠন বরেন্দ্র ভূমি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (বিএসডিও) এবং বিডিও-এর লোকজন হতদরিদ্র মানুষের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার কথা বলে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা জানায়। তাজকেরা তখন এতে অংশ নিয়ে হোমটেস্ট গার্ডেনিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। তারপর অন্যের কাছ থেকে ৬৬ শতাংশ জমি বন্ধক নেন। সেই জমিতে তিনি শুরু করেন প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নের কাজ। স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গোটা জমিতে বিভিন্ন রকমের শাক-সবজি চাষ করেন। আর তাতেই ফিরে আসে সুদিন। তাজকেরা জানান, অভাবের তাড়নায় তিনি তার ছেলেদের লেখাপড়া শিখাতে পারেননি। একমাত্র কন্যা খায়রুনকেই তিনি ডাক্তার বানাতে চাইছেন। কারণ ডাক্তার হয়ে সে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষগুলোকে চিকিৎসাসেবা দিতে পারবে। তাজকেরা বলেন, নিজের হাতে উপার্জন করে সংসার চালাতে পেরে আমি এখন খুব সুখী।