বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুলশান বনানী বারিধারায় নিরাপত্তা জোরদার

৫০ চেকপোস্ট, নিরাপত্তায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দেড় হাজার সদস্য

আলী আজম

ঢাকায় কূটনৈতিকপাড়া বলে খ্যাত গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও থার্টিফার্স্ট নাইট এবং বড়দিন উপলক্ষে আরও একধাপ নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে বসবাসরত বিদেশি রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ক্রেতা সংস্থার প্রতিনিধিদের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে পুরো এলাকায় এক হাজারেরও বেশি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। চেকপোস্ট রয়েছে প্রায় ৫০টি। এ ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর দেড় হাজার সদস্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জঙ্গি হামলার পর কূটনৈতিক জোনে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে মানুষ ও যানচলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। ওই এলাকায় অবস্থান করা বিদেশি নাগরিকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশি চেকপোস্টসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যও। নামানো হয়েছে ঢাকা চাকা নামে বাস ও বিশেষ রিকশা। এগুলো কেবল কূটনৈতিক জোনের ভিতরেই চলাচল করছে। রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির নিয়মিত টহল। কূটনৈতিক জোনের প্রতিটি প্রবেশ পথে শক্তিশালী ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এই ক্যামেরার ভিডিওচিত্র পুলিশ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। রয়েছে ব্যারিকেড। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর থেকে বিদেশি দূতাবাসগুলোর পাশাপাশি তাদের বাসা এবং প্রতিষ্ঠানে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকছে। গুলশান-বনানী-বারিধারার অর্ধশত পয়েন্টে রয়েছে পুলিশ পাহারা। দেড় হাজারের অধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনার পর কূটনৈতিক জোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। থার্টিফার্স্ব নাইট ও বড়দিন উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও একধাপ বাড়ানো হয়েছে। কূটনৈতিক জোনের প্রতিটি পয়েন্ট, বিপণি বিতানসহ প্রায় সব বাসাবাড়ি সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। নিরাপত্তার আধুনিক ছক তৈরি করা হয়েছে, যাতে কোনো অপরাধী অপরাধ করে পার না পায়। পুলিশের কূটনৈতিক জোনের ডিসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, থার্টিফার্স্ব নাইট ও বড়দিন উপলক্ষে কূটনৈতিক জোনকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ বেশিরভাগ কূটনীতিক ও বিদেশি নাগরিক গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায় বাস করেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারলে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। তিনি আরও বলেন, তল্লাশি ছাড়া যানবাহন ও পথচারীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি বেড়েছে টহল। র‍্যাব, থানা পুলিশ, ডিবি, সোয়াত, এসবি, এনএসআইসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সমন্বয় করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিদেশিদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নেওয়ায় তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার কূটনৈতিক জোনের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রয়েছে এক হাজারেরও বেশি সিসি ক্যামেরা।

সর্বশেষ খবর