কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের প্রচারণার আর মাত্র দুই দিন। নগরী পোস্টার ব্যানারে সেজেছে বিয়েবাড়ির সাজে। এদিকে বিয়েবাড়ির মতোই বাজছে নানা ঢংয়ের প্যারোডি গান। চারদিকে উৎসবের আমেজ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ছুটছেন ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে। তাদের সঙ্গে ছুটছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও। পত্রিকা-টিভিতে দেখা কেন্দ্রীয় নেতাদের নগরীর অলিগলিতে দেখে খুশি ভোটাররাও।
আওয়ামী লীগ : আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা গতকাল সকাল থেকে নগরীর ১১, ১২, ১৬ ও ১৭ নং ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন এলাকার ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। তিনি এ সময় কুমিল্লার সুষম উন্নয়নে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানান। সীমা নগরীর সংরাইশ, টিক্কারচর, নবগ্রাম, বৌ-বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় উঠোন বৈঠক করেন। বিকালে নগরীর মুন্সেফবাড়ি এলাকায় উঠোন বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের পত্নী নাসরিন বাহার, মেয়ে তাসনিম বাহার সূচিসহ দলীয় নেতারা ভোট চান। সীমার পক্ষে প্রচারণায় ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, লিয়াকত সিকদার, অজয় কর খোকন, এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, মাসুদুল হায়দার চৌধুরী রোটন, ইসহাক আলী খান পান্না, দেবাশীষ বিশ্বাস, সাইফুর রহমান সোহাগ ও এস এম জাকির হোসেন প্রমুখ। এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারাও বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। দিনভর নগরীর ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ডে ভোট চান বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস পাল। তার সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা তাপস কুণ্ড, অ্যাডভোকেট দীপ্তিশ হালদার, সাগর হালদার, অ্যাডভোকেট তপু ঘোষ, কুমিল্লা জেলা নেতা অচিন্ত্য দাস টিটু, উজ্জ্বল দেব প্রমুখ। তাপস পাল বলেন, কুমিল্লার হিন্দুরা এখন ঐক্যবদ্ধ। তারা বলেছেন, নৌকার প্রশ্নে কোনো আপস নেই। ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মীজানুর রহমান, আওয়ামী লীগের প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর।
এদিকে সীমার পক্ষে প্রচারণা করেন ওলামা লীগের সভাপতি আল্লামা ইলিয়াস হোসাইন বিন হেলালী, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. দিদারুল আলম।বিএনপি : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। তিনি উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য পুনরায় তাকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। তার পক্ষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মোস্তাক মিয়া, আবদুল আউয়াল খান, সদস্য মোস্তফা খান সফরী, সালাহউদ্দিন ভুইয়া শিশির, একরামুল হক বিপ্লব, হায়দার আলী খান লেলিন, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু প্রমুখ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কুমিল্লা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। নজরুল ইসলাম খান প্রার্থী সাক্কুর বাসভবনে বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় অন্যদের মধ্যে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, হারুন অর রশিদ, অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু প্রমুখ বক্তৃতা করেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, দুঃশাসনবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ফ্যাসিবাদের কবল থেকে দেশ বাঁচাও-মানুষ বাঁচাও স্লোগান নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে।
এই আন্দোলন দমন করতে গিয়ে সরকার বিএনপির শত শত নেতা-কর্মীকে হত্যা, গুম করছে। লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এ আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের বিজয় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সন্ধ্যায় নগরীর শিশু মঙ্গল রোডে অবস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাচনী সেলে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয়। সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভুইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।