বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত। দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি ভালো থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম রাখা সম্ভব হয়। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। আমাদের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গেই বসবাস করতে হবে। কাজেই সঠিক পরিকল্পনা থাকলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখা সম্ভব।

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সচিব, তিন বাহিনী প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট সব দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় তার সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে। যখনই কোনো দুর্যোগের খবর পাওয়া গেছে তখনই সরকার ছুটে গেছে এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি রোধে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ’৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি সে সময় দুর্যোগের খবর পর্যন্ত রাখার প্রয়োজন মনে করেনি। এবারের বন্যায় সরকারের দুর্যোগকালীন প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল বলেই কেউ না খেয়ে মরেনি। সরকারের সব দফতরের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের  নেতা-কর্মীরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলেই দুর্গত মানুষের কাছে খাদ্য, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ত্রাণসামগ্রী যথাসময়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখে জনগণের ভোগান্তি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সরকার খাদ্য আমদানি করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দেশের পার্বত্য অঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ধসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী, দমকল বাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থা সেখান থেকে দুর্গত মানুষকে উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সদস্য এবং তার দলের নেতা-কর্মীরা দিনরাত মাঠে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এ সময় সবাইকে একযোগে কাজ করারও আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বন্যা ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি করে কৃষকের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনলেও এটি সঙ্গে করে অনেক পলিমাটিও বয়ে আনে যা জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা প্রতিরোধে বঙ্গবন্ধুর মুজিব কেল্লা তৈরির কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এক হাজার সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যার ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে বহুমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। তিনি বলেন, তার সরকার ১৯৯৮ সালে এক দীর্ঘমেয়াদি বন্যা প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছিল। যেখানে দেশের ৭০ শতাংশ ভূখণ্ড পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল এবং অন্তত ২ কোটি মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তা অত্যন্ত সফলভাবেই মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ এখন যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। জাতির পিতা বন্যা মোকাবিলায় ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আর বর্তমান সরকার ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক গড়ে তুলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর