মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আয়কর পরিচয়পত্র পেলেন প্রধানমন্ত্রী

মন্ত্রিসভায় আবহাওয়া আইনের খসড়া অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড (আয়কর পরিচয়পত্র) দেওয়া হয়েছে। গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠকের শুরুতেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এই পরিচয়পত্র হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে আয়কর পরিচয়পত্র তুলে দেওয়ার কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ১৯৮২-৮৩ করবর্ষ থেকে নিয়মিত আয়কর দিয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সে জন্য এনবিআর একটি স্বীকৃতিফলক তৈরি করে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে সরবরাহ করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজ ব্যবহার করে করদাতাদের জন্য একটি ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড প্রচলন করেছে। এ কার্ডটি করদাতাদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি করেছে। ১ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকার আয়কর মেলা থেকে ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে করদাতারা এটিকে উন্নয়নে তাদের অংশীদারিত্বের পরিচয় বলে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।

আবহাওয়া আইনের খসড়া : এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরকে আইনি কাঠামো দিতে ‘আবহাওয়া আইন-২০১৭’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মোহাম্মদ শফিউল আলম এই অনুমোদনের কথা জানিয়ে বলেন, এর আগে গত বছরের ২২ আগস্ট আবহাওয়া আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আবহাওয়া সংক্রান্ত কোনো আইন আমাদের ছিল না। এটা নতুনভাবে প্রণীত বহুল প্রত্যাশিত একটা আইন। পুরনো বিষয়গুলো নিয়ে নতুন আইনটি করা হয়েছে। এগুলো অলরেডি চলমান আছে।’ আইনের মূল ফোকাসটি হলো— এই আইনের মাধ্যমে বিদ্যমান আবহাওয়া অধিদফতরকে একটি আইনি কাঠামো দেওয়া হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনে ৩১টি ধারা রয়েছে বলেও জানান শফিউল আলম। তিনি বলেন, ‘অধিদফতর যেভাবে গঠন করা হয় এটি সেই জাতীয় আইন। এখানে আবহাওয়ার সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া ঘটনা নামে একটি অংশ রয়েছে এখানে। আবহাওয়া বিজ্ঞানী, ভূমিকম্প, সুনামি কাকে বলা হবে, সেই সংজ্ঞা আইনে দেওয়া হয়েছে। খসড়া আইন অনুযায়ী আবহাওয়া অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় হবে ঢাকায়। এ ছাড়া আইনে অধিদফতরের কার্যাবলি, সেবা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিষয়ে বলা হয়েছে। মহাপরিচালকের নিয়োগ ও কাজের বিষয়ে বলা হয়েছে।

৭ মার্চের ভাষণের ওপর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন প্রধানমন্ত্রীর : এদিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ওপর খ্যাতিমান লেথকদের বিশ্লেষণধর্মী বই ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ : রাজনীতির মহাকাব্য’র মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে বইটির ইলেকট্রনিক ভার্সন অর্থাৎ ই-বুক এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের উদ্বোধন করেছেন তিনি। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বইটির এই তিন সংস্করণের উদ্বোধন করেন। সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ জাতির ইতিহাসে অনন্য গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ বিষয়টিকে চিরঞ্জীব বা অবিস্মরণীয় করার জন্য এই ভাষণের ২৬টি বাক্যের ওপর দেশের খ্যাতিমান লেখকদের কাছ থেকে পাওয়া একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রকাশনা আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) বিভাগ করেছে। এর সঙ্গে ডিজিটাল বুক ও মোবাইল অ্যাপও তারা তৈরি করেছেন বলে জানান তিনি।

আখ চাষিদের উপ-কর দিতে হবে না : সুগার মিল এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্য আখ চাষিদের কাছ থেকে উপ-কর নেওয়া সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। ‘সুগার (রোড ডেভেলপমেন্ট) অর্ডিন্যান্স-১৯৬০’ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সুগার মিল এলাকায় যারা চিনি উৎপাদন করবে বা আখ চাষিদের কাছ থেকে রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্য উপ-কর নেওয়া হয়। এই উপ-করটা আসলে ইউজফুল (প্রয়োজনীয়) নয়। এখন এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, কোথাও কোথাও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ অনেক প্রতিষ্ঠান রাস্তাঘাট করে ফেলেছে। ‘সুগার মিল কর্তৃপক্ষের আলাদা করে রাস্তাঘাট মেরামত করা বা তৈরি করার এখন আর কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। উপ-করটা কৃষকদের জন্য একটা বাড়তি বোঝা।

সর্বশেষ খবর