শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দামি গাড়িতে সিংহ চিতার বাচ্চা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

একটি বিলাসবহুল প্রাডো গাড়িতে করে ঢাকা থেকে যশোরের সীমান্ত এলাকা নাভারণের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বিড়াল প্রজাতির প্রাণীর চারটি বাচ্চা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে যশোরের পুলিশ গতকাল দুপুরে যশোর শহরের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকা থেকে গাড়িটি আটক করে বাচ্চা চারটিকে উদ্ধার করে। এসময় গাড়ি থেকে কামরুজ্জামান বাবু ও রানা মিয়া নামে দুজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের নেওয়া হয় যশোর পুলিশ লাইনে। খবর দেওয়া হয় যশোর বন বিভাগের কর্মকর্তাদের।

আটক বাবু ও রানা পুলিশকে জানান, বাচ্চা চারটি তারা ঢাকার উত্তরা থেকে নিয়ে এসেছেন। এগুলো যশোরের নাভারণের এক ব্যক্তির কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের বলা হয়েছে। এর বেশি কিছু তারা জানেন না। পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, প্রাডো গাড়িটির মধ্যে দুটি কাঠের বাক্সে চারটি বাচ্চা রাখা ছিল। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হবে এবং আদালতের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যশোর বন বিভাগের বন সংরক্ষক মইন উদ্দিন খান বিকাল চারটার দিকে বলেন, সাধারণভাবে দেখে মনে হচ্ছে চারটির মধ্যে দুটি বাচ্চা সিংহের এবং বাকি দুটি লেপার্ড ক্যাটের (লেপার্ড ক্যাট দেখতে চিতাবাঘের মতো, তবে চিতাবাঘের চেয়ে এগুলো আকারে একটু ছোট হয়)। সিংহের বাচ্চা দুটির বয়স ৪-৫ মাস এবং লেপার্ড ক্যাট দুটির বয়স দুই মাস হতে পারে। তবে এগুলো আসলেই সিংহের বা লেপার্ড ক্যাটের বাচ্চা কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য খুলনা থেকে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা যশোর আসছেন। তারা দেখে এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারবেন। বিকাল ৫টার দিকে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা বিভাগীয় কর্মকর্তা মদিনুল আহসান যশোর পৌঁছেন। বাচ্চা চারটি দেখার পর তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দুটি বাচ্চা সিংহের এবং বাকি দুটি লেপার্ডের (চিতাবাঘের) বলেই মনে হচ্ছে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এগুলোকে ঢাকায় পাঠাতে হবে’। এদিকে সিংহ ও লেপার্ডের শাবক বাংলাদেশে কীভাবে এলো, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে এরই মধ্যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা হয়েছে। আটক দুজনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুজন জানিয়েছেন, ঢাকার উত্তরা থেকে তাদের এ চারটি বাচ্চা দেওয়া হয়েছে নাভারণের এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। পুলিশ সুপার বলেন, ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যেই এগুলো সীমান্তের কাছে নেওয়া হচ্ছিল বলে মনে হচ্ছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলেই অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে এগুলোর প্রকৃত মালিক কারা, কার কাছে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, কীভাবে এত ছোট বাচ্চা বাংলাদেশে এলো, এসব বিষয় জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে বের করার চেষ্টা করা হবে।

সর্বশেষ খবর