রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে ১৯৩ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১২৮টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি ২০টিকে কম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এসব কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা নেবে নির্বাচন কমিশন। ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও এখনো নির্বাচন কমিশনের কোনো আদেশ আসেনি। তবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সব ধরনের উদ্যোগই নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং ও রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার। এর আগে ২৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম রংপুরে এসে নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনামূলক সভায় রসিক নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে একটি কেন্দ্রে ডিজিটাল ভোটিং মেশিন (ডিভিএম) ব্যবহার এবং একটি কেন্দ্রকে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হিট হয়ে গেছে ২২ নভেম্বর। গতকাল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর হিট রানে টিকে যাওয়া প্রার্থীরাই এখন মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লড়বেন। আজ সোমবার প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। ৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঘরোয়াভাবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর মধ্যদিয়ে নগরজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে নির্বাচনী উত্তাপ। ভোট উত্সবে মেতে উঠবেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। এমনিতেই কয়েকদিন ধরে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী কাউকেই ঘরে দেখা মিলছে না। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তারা গ্রাম থেকে গ্রামে, পাড়া থেকে মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন। পথসভা করে ভোট ভিক্ষার পাশাপাশি নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন।
আচরণবিধি লঙ্ঘন রোধে ১১টি ভিজিলেন্স টিম : আনুষ্ঠানিক প্রচারণার দিন থেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘন রোধে মাঠে তত্পর থাকবে ১১টি ভিজেলেন্স টিম। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এসব টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনকারী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে তত্ক্ষণাৎ আইনগত ব্যবস্থা নেবেন তারা। এ ছাড়া ভোটগ্রহণের দিন ৩৩টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একটি করে ভিজিলেন্স টিম দায়িত্ব পালন করবে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার : রসিক নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিনে গতকাল মেয়র পদে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। ফলে সাতজন প্রার্থীই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন। তারা হলেন— আওয়ামী লীগের সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু, বিএনপির কাওসার জামান বাবলা, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এ টি এম গোলাম মোস্তফা বাবু, বাসদের আবদুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সেলিম আখতার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। গত নির্বাচনে মেয়র পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এদিকে ১০ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ৩৩টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন ২১১ জন। তবে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় ১১ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৬৫ জন প্রার্থী।আওয়ামী লীগের ২১ কেন্দ্রীয় নেতা আসছেন আজ : আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টুর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের একটি টিম আজ রংপুরে আসছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোতাহার হোসেন মণ্ডল মওলা জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য জেলা ও মহানগরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারণায় নামবেন। প্রচারণার শেষদিন পর্যন্ত তারা রংপুরে অবস্থান করবেন। অপরদিকে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে কবে আসবেন সে দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। বিএনপি প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিজু বলেন, প্রচারণায় অংশ নিতে দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিবসহ অনেক হেভিওয়েট নেতার আসার কথা রয়েছে। তবে দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এ এম ইয়াসির বলেন, পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা ৭ ডিসেম্বরের পরে আসবেন।