রাজধানীর ইন্দিরা রোডের একটি প্রেসের এক কর্মচারীর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে আসছিল। ওই প্রেসেই ছাপা হতো ঢাবির ভর্তির প্রশ্নপত্র। প্রেস কর্মচারীসহ তিনজনের মাধ্যমে মূলত ফাঁস হওয়া প্রশ্ন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হতো। এ ঘটনায় সিআইডি পুলিশ এ পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, ৭ ডিসেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে পাঁচজন কারাগারে, তিনজন রিমান্ডে এবং দুজন গ্রেফতার অবস্থায় আছে। গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, বুধবার জামালপুর থেকে সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল সকালে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড থেকে খান বাহাদুরকে গ্রেফতার করা হয়। খান বাহাদুরই প্রেসের কর্মচারী। তার মাধ্যমে মূলত প্রশ্নফাঁসের সূত্রপাত। খান বাহাদুরের সঙ্গে পরিচয় ছিল সাইফুল ইসলামের। সাইফুলের সঙ্গে পরিচয় ছিল রকিবুল হাসানের। মূলত এই তিনজনের মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন বিভিন্ন জায়গায় ছড়াতো। ফলে এই তিনজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে প্রশ্নফাঁস ও ডিভাইস সাপ্লাই পদ্ধতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সাত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিমের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। তাদের তথ্যানুযায়ী ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর জিগাতলা থেকে ডিভাইস সাপ্লাই ও প্রশ্ন ফাঁস করা গ্রুপের অন্যতম নাজমুল হাসান নাঈমকে গ্রেফতার করা হয়। ৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর মেডিকেল এলাকা থেকে বনি ইসরাইল ও বিনোদপুর এলাকা থেকে মারুফকে গ্রেফতার করা হয়। বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, মূলত বনি ইসরাইল ও মারুফ দুজনই ছাত্র সংগ্রহ ও তাদের তথ্য সংগ্রহ করে জানাত রকিবুল হাসানকে। রকিবুল মূলত নাটোর ও পাবনা জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা। ১১ ডিসেম্বর রাজশাহী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রকিবুলের দেওয়া তথ্যে সিআইডি ১৩ ডিসেম্বর জামালপুর থেকে সাইফুলকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। আর চলতি বছর এই পরীক্ষা নিয়ে ডিজিটাল জালিয়াতি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এরা ২ থেকে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো।