শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কে হচ্ছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

কে হচ্ছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি

চট্টগ্রাম ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে মহানগর রাজনীতিতে। এ শূন্যতা পূরণ করার জন্য কে হচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি— এ নিয়ে কয়েকদিন ধরেই চলছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন। বর্তমান কমিটির সিনিয়র নেতাদের অনেকেই বয়সের ভারে ন্যুব্জ। অনেকেই পিছিয়ে রয়েছেন গ্রহণযোগ্যতা এবং দল চালানোর মতো সক্ষমতা না থাকার কারণে। নানা সমীকরণে নেতা-কর্মীদের ধারণা আ জ ম নাছির সভাপতি এবং মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে পুনর্গঠিত হবে মহানগর কমিটি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো কিংবদন্তি নেতাকে হারিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শোকাহত। তাই সভাপতি কিংবা ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নাম ঘোষণা দেওয়ার জন্য কিছুদিন সময় নেওয়া হবে।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জহুর আহমদ চৌধুরীর ছেলে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তারই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হওয়ার কথা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর অসুস্থতা। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অনেকটা অক্ষমতার কারণে তিনি বিবেচনায় নাও আসতে পারেন। একইভাবে আলোচনায় রয়েছেন সহ-সভাপতি ও প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। কিন্তু মন্ত্রিত্ব নেওয়ার পর থেকে মহানগর রাজনীতির কার্যক্রমে এক প্রকার নিষ্ক্রিয় রয়েছেন তিনি। সভাপতি হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. আফসারুল আমিন চৌধুরী এমপি, খোরশেদ আলম সুজন ও মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন। দলের নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের কিছু নেতার সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে সাবেক মন্ত্রী আফসারুল আমিনের। খোরশেদ আলম সুজন সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয়। কিন্তু একদা বাকশাল করার কারণে আওয়ামী লীগের অনেকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন এ নেতাকে। নঈম উদ্দিন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হলেও রাজনীতির মাঠে তার গ্রহণযোগ্যতা ও এত বড় দল চালানোর ব্যাপারে অনেকের সংশয় রয়েছে। বয়সের কারণে অসুস্থও তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, দলের হাইকমান্ড আ জ ম নাছিরকে সভাপতি এবং মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে সাধারণ সম্পাদক করতে পারেন। যেমনটা মহিউদ্দিন চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক থেকে সরাসরি সভাপতি হয়েছেন। নগরীর মেয়র ও দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এরই মধ্যে দলে প্রভাবশালী অবস্থানে রয়েছেন আ জ ম নাছির। এ ছাড়া দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে নাছিরের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সব মিলিয়ে সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন নাছির। মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে হিসেবে অটোমেটিক চয়েস হিসেবে সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে নওফেলকে।

তবে আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মেয়র নাছিরের বিরুদ্ধে নেতিবাচক গল্প তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে বিরোধী শিবির। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ করে দেশব্যাপী আলোচনায় ঝড় ওঠে। তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের অভিযোগ ভালোভাবে নেননি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে নারায়ণগঞ্জের মেয়রকে উপমন্ত্রী, রংপুরের মেয়রকে যেখানে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হলেও চট্টগ্রামের মেয়রের এ ধরনের মর্যাদা জোটেনি। এমন অবস্থায় আ জ ম নাছিরকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে হয়তো না-ও আনা হতে পারে।

সর্বশেষ খবর