শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিএনপিতে মাহবুব, আওয়ামী লীগে খালিদ এগিয়ে

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বিএনপিতে মাহবুব, আওয়ামী লীগে খালিদ এগিয়ে

দিনাজপুর-২ আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুই দলেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে। দুই দলেরই একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী ভোটের মাঠে বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে দল কোন্দল-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে পারবে সে দলের প্রার্থীই আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হবে বলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মনে করেন।

২০০১ সালের মতো আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে আবার আঘাত হানতে চায় বিএনপি। অন্যদিকে টানা দুবারের বিজয়ী এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আসনটিকে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টিও আসনটি পেতে চেষ্টা করছে।  তবে এ আসনে জামায়াতের কোনো প্রার্থীর প্রচারণা এখনো দেখা যায়নি।

দিনাজপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন— কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান এমপি খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও দলের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়ের ছেলে মানবেন্দ্র রায়।

অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, বোচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক এবং বিরল উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আ ন ম বজলুর রশিদ। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার চৌধুরী এবং বোচাগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও জাতীয় যুব সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জুলফিকার হোসেন মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এ আসনে জয়লাভ করেন স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক মো. ইউসুফ আলী। পরে ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের সতীশ চন্দ্র রায়। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সতীশ চন্দ্র রায়কে হারিয়ে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির মাহবুবুর রহমানকে হারিয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ২০১৪ সালে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন। আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হলেও দলীয় কোন্দলের কারণে ২০১৪ সালের বিরল উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও দুটি ভাইস চেয়ারম্যান পদের একটিতেও জয়লাভ করতে পারেনি দলীয় প্রার্থী। আগামী ২৮ ডিসেম্বর বিরল পৌরসভার নির্বাচনেও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা শৃঙ্খলা ভেঙে ভোট করছেন। এরই মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আজাদ মণিসহ কয়েকজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। অবশ্য পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপিরও বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তবে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী নেই বিএনপির। উদীয়মান রাজনীতিক ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিরল ও বোচাগঞ্জের তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিটি কর্মসূচিতে এবং মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেন। এলাকায় তার গ্রহণযোগ্যতাই বেশি। ফলে আগামী নির্বাচনে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর মনোনয়ন লাভের সম্ভাবনাই প্রবল বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়। স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এলাকায় বেশি সময় দেন না এমন অভিযোগ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। ২০০১ সালে তিনি দিনাজপুর-২ থেকে এমপি নির্বাচিত হলেও আগামী নির্বাচনে তাকে দিনাজপুর সদর-৩ থেকে প্রার্থী করা হতে পারে বলেও অনেক নেতা-কর্মী মনে করেন। তরুণ রাজনৈতিক নেতা ও বোচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক তার বাবা রিয়াজুল হক চৌধুরী ১৯৮৮ সালে এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করেন। তার বাবার ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে এ আসনে মনোনয়ন পেতে তিনি আগ্রহী। দিনাজপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জুলফিকার হোসেন গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর