মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপি জোটের নীরব প্রচারণা

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপি জোটের নীরব প্রচারণা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুলাউড়া উপজেলা ও কমলগঞ্জ (আংশিক) নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-২ আসন। কুলাউড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে আসনটির প্রায় তিন লক্ষাধিক ভোটার। এর মধ্যে ৮০ হাজারেরও বেশি রয়েছেন চা শ্রমিক। নির্বাচনে তাদের ভোটই মূল নিয়ামক। নির্বাচনের সব হিসাব পাল্টে দিতে পারেন চা শ্রমিকরাই। এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত তিনবারের সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাস খান বিএনপি জোট থেকে মনোনয়ন পেলে চমক দেখাতে পারেন বলে ধারণা সাধারণ ভোটারদের। এ আসনে রয়েছে তার ভোটব্যাংক। তবে এখনো সাধারণ মানুষের আস্থা রয়েছে আওয়ামী লীগের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ও বিএনপির এম এম শাহীনের প্রতি। তারা দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারলে তুমুল লড়াই হবে বলে স্থানীয় জনগণ মনে করেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন, বর্তমান এমপি আবদুল মতিন, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, বি এম এ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি  রুকন উদ্দিন আহমদ, পুলিশের সাবেক এআইজি সৈয়দ বজলুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আতাউর রহমান শামীম, সাবেক ছাত্রনেতা ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের তথ্য সম্পাদক সাংবাদিক কামাল হাসান, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নবাব আলী ওয়াজেদ খান বাবু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনু ও যুগ্ম-সম্পাদক এ কে এম সফি আহমদ সলমান। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হতে তত্পর রয়েছেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাস খান, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও এ আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক দুইবারের এমপি এম এম শাহীন ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবেদ রাজা। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, গত সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী মুহিবুল কাদির চৌধুরী পিন্টু, জাতীয় পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম শামীম ও কেন্দ্রীয় সদস্য আহমদ রিয়াজ।

নওয়াব আলী আব্বাস খান ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে বলেন, এ এলাকার মানুষ আমাকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আশা করি আগের মতো কুলাউড়া-কমলগঞ্জের মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবে। কথা হয় এক সময়ের আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা ১৯৯৬ সালে এমপি নির্বাচিত সুলতান মনসুরের সঙ্গে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নের জন্য তাকে মানুষ স্মরণ রেখেছেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে নির্বাচন করব। তবে কোন প্রতীকে করব তা সময়ই বলে দেবে। দুইবারের সাবেক এমপি এম এম শাহীন জানান, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, আর কুলাউড়া ও কমলগঞ্জের মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়ায়, তবে মানুষের সেই সিদ্ধান্তকে তিনি স্বাগত জানিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। কুলাউড়ার মাটি ও মানুষের নেতা মরহুম আবদুুল জব্বার ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। ১৯৬৮ সাল থেকে আজীবন কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। তিনি কুলাউড়া থেকে এমপি ও ১৯৯০ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রয়াত এই নেতার ছেলে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। আমিও আমার বাবার ন্যায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইব।

মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এ এন এম আবেদ রাজা জানান, দল এবং জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে আমি নির্বাচন করব। সেই প্রস্তুতি আছে।

সর্বশেষ খবর