মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চার নারী ধর্ষণে ‘কিছুটা ব্যর্থতা’ স্বীকার পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত চার নারী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘কিছুটা ব্যর্থতা’ ছিল বলে স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।  গতকাল দুপুরে কর্ণফুলী থানায় এক সংবাদ সম্মেলন করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) হারুন উর রশিদ হাযারি এমন মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, মামলা নেওয়া এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশের আংশিক ব্যর্থতা ছিল। তখন বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার ছিল।  তবে এ  ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং আসামিদের গ্রেফতারেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি। সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন চার নারী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি ও পুলিশের গাফিলতির বিষয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে কয়েক দফায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। একই সঙ্গে নারী উন্নয়ন ফোরাম নামের একটি সংগঠনের অভিযোগ, অনেক তালবাহানা শেষে পুলিশ মামলা নিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করলেও তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ না করে ‘অযথা সময়ক্ষেপণ’ করছে। এ সংগঠন ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনরের কার্যালয় এবং পরদিন কর্ণফুলী থানা  ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও পালন করবেন। ইতিমধ্যে উক্ত সংগঠনটি মামলা নিতে বিলম্ব এবং ধর্ষকদের গ্রেফতার গড়িমসির অভিযোগে কর্ণফুলী থানার ওসি সৈয়দুল মোস্তফাকে প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২২ ডিসেম্বর মানববন্ধন করেছে।

লিখিত বক্তব্যে হারুন উর রশিদ হাযারী দাবি করে আরও বলেন, ঘটনার দুই-তিনদিন পর বাদি থানায় এলেও ধর্ষণের কথা বলেননি। দস্যুতার বিষয়টিও তিনি শুধু মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া সুজন ওরফে আবুকে ২৮ ডিসেম্বর টিআই প্যারেডের মাধ্যমে ভিকটিমের শনাক্ত করার কথা রয়েছে। এ সময় সিএমপির সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) জাহেদুল ইসলাম বলেন, তদন্তের অনেকগুলো পদ্ধতি আছে। টিআই প্যারেডও একটা পদ্ধতি। আসামিকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নেওয়ার আগে চূড়ান্তভাবে শনাক্তের জন্যই টিআই প্যারেড করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন কাউকে ধরেই রিমান্ডে নেওয়া, এটা একটা সহজ পদ্ধতি। তবে প্রতিটি ঘটনার পেছনে অনেক কিছু থাকে। এতটুকু বলতে পারি, আসামিদের গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। খুব শিগগিরই সুখবর দিতে পারব।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে কর্ণফুলীর বড়উঠান ইউনিয়নের শাহ মিরপুর গ্রামে একটি বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে বাড়ির চার নারীকে ধর্ষণ করে ডাকাতরা। চারজনের মধ্যে তিনজন প্রবাসী তিন ভাইয়ের স্ত্রী, অন্যজন তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা ননদ। এই পরিবারের চার ভাইয়ের মধ্যে তিনজন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। তিন ভাইয়ের স্ত্রী তাদের শাশুড়ি ও দুই সন্তান নিয়ে এই বাড়িতে থাকেন। ধর্ষিতা গৃহবধূদের একজন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন। এ ঘটনায় মামলা নিতে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসি করার অভিযোগের পর ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাবেদের নির্দেশে কর্ণফুলী থানা পুলিশ প্রায় সাতদিন পর মামলা  নেয়। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন মো. সুজন ওরফে আবু, মাহমুদ ফারুকী ও বাপ্পী।

সর্বশেষ খবর