শিরোনাম
সোমবার, ৫ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোটা সংস্কারের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ

চক্রান্ত বললেন সমর্থনকারীরা

প্রতিদিন ডেস্ক

কোটা সংস্কারের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ

কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল রাজধানীতে বিক্ষোভ করেন চাকরি প্রত্যাশীরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে আবারও বিক্ষোভ করেছেন চাকরি প্রত্যাশীরা। গতকাল রাজধানীর শাহবাগে অন্তত দুই সহস্রাধিক চাকরি প্রত্যাশী এই বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভ সমাবেশে তারা ১৩ মার্চের মধ্যে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের আলটিমেটাম দেয়। অন্যদিকে একই দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : কোটা সংস্কারের দাবিতে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা শাহবাগে জড়ো হতে থাকেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, ১৩ মার্চের মধ্যে কোটা সংস্কারের পাঁচ দফা দাবি আদায় না হলে ১৪ মার্চ সারা দেশে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও কেন্দ্রীয়ভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও করা হবে। আন্দোলনরতদের পাঁচ দফা দাবি হলো- কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানে তাদের দাবি তুলে ধরেন। প্ল্যাকার্ডগুলোয় লেখা ছিল, ‘কোটা বৈষম্য থেকে মুক্তি চাই’, ‘নাতি-পুতি কোটা বাতিল চাই, কোটা পদ্ধতি বাতিল চাই’, ‘ইহা কোটা নয়, বৈষম্য’, ‘১০%-এর বেশি কোটা নয়’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়,  বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি। এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। ওই দিন ৩ মার্চের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরদিন ৪ মার্চ আবারও আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল তারা বিক্ষোভ করেন।

ইবিতে অবস্থান ধর্মঘট : সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ গতকাল বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিবের পাদদেশে পাঁচ দফা দাবিতে এ অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে। এ সময় ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘বৈষম্যের জাল ছিঁড়তে হলে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে’, ‘শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর মেধা জাতির মানদণ্ড’, ‘হয় কোটা ব্যবস্থার সংস্কার কর নতুবা আমাকে গুলি কর’ এমন স্লোগান সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা। বক্তব্য রাখেন কৌশিক রাহাত, হুয়ায়ুন আহমেদ সম্রাট, মনজুর আহমেদ প্রমুখ।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে চক্রান্ত : সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছে একটি মহল। অতীতেও মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, বর্তমানেও তা অব্যাহত আছে। কিন্তু তা সফল হতে দেওয়া হবে না। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও লাল-সবুজ পতাকা মিছিলে বক্তারা এ কথা বলেন।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক, ঢাকা মহানগর কমান্ডার আমির হোসেন মোল্লা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ পারভেজ জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ, মো. আবুল ফয়েজ, কাজী আশরাফ হুমায়ূন বাংগাল, এম এ জলিল, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের হাজী এমদাদুল হক, জাহিদুল ইসলাম মোল্লা, মো. নুরুজ্জামান ভুট্টো, লুবনা খান, আমিনুল ইসলাম রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন, শাহিনুর করিম বাবু, ডা. মো. মহসীন, রুবিনা ইয়াসমিন অন্তরা, মো. বেলাল হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, নুরজাহান বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের মেধাহীন বলে অপব্যাখ্যা দিয়ে তাদের ক্যাডারভুক্ত পদসহ সরকারি চাকরি থেকে দূরে রাখতেই বারবার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটা তখনই বাস্তবায়িত হয়, যখন তারা প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেন। এ ছাড়া কোটা বাস্তবায়নের নজির নেই। তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কোটা বাতিল বা কমানোর কোনো সুযোগ নেই। আগামী ৮ মার্চ সারা দেশের জেলায় জেলায় কোটাবিরোধী রিটের প্রতিবাদে ‘মানববন্ধন’ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সর্বশেষ খবর