বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

নীল গলা বসন্ত বাউরি

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

নীল গলা বসন্ত বাউরি

ষড়ঋতুর বাংলাদেশ। ছয়টি ঋতু বদলে যায় প্রকৃতির রূপ। আর ঠিক একইভাবে ঋতু ভেদে বনের পাখিরাও তাদের রূপ বদলায়। এমনই একটি পাখি নীলগলা বসন্ত বাউরি। এটা বাংলা নাম। ইংরেজি নাম : Blue-throated Barbet আর বৈজ্ঞানিক নাম Psilopogon asiaticus. এদের আরও বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে ছোট বসন্ত বাউরি, বড় বসন্ত বাউরি, নীল গলা বাসন্তী, নীল কান বাসন্তী। আমাদের দেশে সারা বছরই এর দেখা মেলে। পাখি দেখতে খুবই সুন্দর। কিন্তু গাছের সবুজ পাতার রঙে গায়ের রং হওয়ায় তাদের দেখা পাওয়া দুস্কর। তবে বসন্তকালেই এদের বেশি ডাকাডাকি করতে দেখা যায়। অন্য সময় তারা একটু কম ডাকাডাকি করে বলে, কম দেখা যায়। শ্রীমঙ্গলের শৌখিন ফটো গ্রাফার খোকন থৌনাউজম চলতি মার্চ মাসে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে পাখির ছবি তুলতে গিয়ে নীলগলা বসন্ত বাউরি দেখা পান। খোকন  থৌনাউজম বলেন, এই পাখিটি দেখতে খুব সুন্দর। সারা বছরই এদের দেখা যায়। তবে বসন্তকাল এলে তারা একটু বেশি ডাকা ডাকি করে বলে বেশি দেখা যায়। গাছের সবুজ পাতার মধ্যে তারা লুকিয়ে থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, নীলগলা বসন্ত বাউরি আমাদের দেশীয় পাখি। এরা বড় গাছে বেশি বিচরণ করে। ঘন পাতার আড়ালে থাকতে পছন্দ করে। এরা কখনো মাটিতে নামে না বৃক্ষচারী পাখি। এদের প্রজনন মৌসুম বর্ষার শুরুতেই। তবে অঞ্চলভেদে সময়ের তারতম্য ঘটে। এরা মরা গাছের কাণ্ডে বা ডালের মধ্যে গর্ত করে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিমের রং সাদা। তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। আর ১৫ থেকে ২০ দিনেই  বাচ্চারা উড়াল দিতে পারে। এরা লম্বায় ১৬-১৭ সেন্টিমিটার। কপাল, বুক টকটকে লাল। চোখে হলুদ রিং। গলা, মুখ ও বুকের উপরিভাগ নীল। পিঠ ঘাসের মতো সবুজ।

 নিচের দিকে খাড়া খাড়া মোটা রেখা। ওড়ার পালক কালচে। চোখের মণি কালচে-ধাতব। ঠোঁট শক্ত মজবুত ধূসর শিং রঙা। ঠোঁটের গোড়ায় রয়েছে লম্বা কয়েকটি লোম। নীলগলা বসন্ত বাউরি বন, কুঞ্জবন ও বাগানে বিচরণ করে। কখনো কখনো ফলআহারী পাখির দলে যোগ দেয়। এরা একা বা জোড়ায় উড়ে বেড়ায়। এদের প্রধান খাবার ফল। আর ফল না পেলে কদাচিৎ এরা পোকামাকড় খেয়ে থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার অঞ্চলে এদের দেখা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর