শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

নবদম্পতিকে রাতভর থানায় নির্যাতন

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরের ডাসার থানার এএসআই অভিজিতের বিরুদ্ধে নবদম্পতিকে থানায় আটকে রেখে টাকার জন্য নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার মনির খানের ছেলে রিপন খানের সঙ্গে মুন্সিগঞ্জের সাহাবদ্দিন আহমেদের মেয়ে শশী আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। এই প্রেমের সূত্র ধরেই তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বুধবার সকালে ডাসার থানার পশ্চিম বনগ্রামের আত্মীয় হনুফা সন্নামতের বাড়িতে বেড়াতে আসেন নবদম্পতি। পরে ডাসার থানার এএসআই অভিজিত ওই দিন বেলা ১২টার দিকে রিপন ও শশী দম্পতিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। এ সময় রিপন ও শশীর কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেন এএসআই অভিজিত। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় রিপন ও শশীর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান পুলিশের ওই কর্মকর্তা। একদিন অতিবাহিত হলেও আটকের বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। কোনো আসামি আটকের পরপরই জেলা পুলিশকে অবহিত করার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। বিধান মোতাবেক আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে চালান দেওয়ার কথা থাকলেও তাও করা হয়নি। এতে করে আইনের চমর লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। গতকাল দুপুরে বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হলে শশী আক্তারকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে টাকা না পাওয়ার কারণে রিপনকে ছাড়া হয়নি। রিপনের বাবা মনির খান বলেন, ‘আমার ছেলে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরেই বিয়ে করেছে। প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েরা বিয়ে করা তো অপরাধ নয়। মেয়ের বাবাও তো আমার ছেলের নামে কোনো মামলা করেননি। ডাসার থানা পুলিশ এখন আমার ছেলেকে ছেড়ে দিতে ১ লাখ টাকা দাবি করছে। আমরা গরিব মানুষ। এত টাকা কোথায় পাব? অপরাধ করলে পুলিশ আদালতে চালান দিয়ে দেবে। কিন্তু তা না করে থানায় আটকে রাখা হয়েছে।’ আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী আবুল হাসান সোহেল বলেন, ‘কাউকে কোনো অপরাধে আটক করলে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে চালান দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া বিনা অপরাধে কাউকে আটকে রাখা এক ধরনের শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ এ ব্যাপারে এএসআই অভিজিত টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি নির্যাতন করিনি। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমার বিচার হবে।’ ডাসার থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ছেলের অভিভাবকরা এলে তাকেও ছেড়ে দেওয়া হবে।’ টাকা দাবি ও শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, ‘আটকের বিষয়টি থানা থেকে আমাদের অবহিত করা হয়নি। তবে আটকের পরই আমাদের অবহিত করার নিয়ম রয়েছে এবং কোনো অপরাধের সংশ্লিষ্টতা পেলে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে চালান দেওয়ার বিধান। দু-একজন খারাপ কর্মকর্তার কারণে পুরো পুলিশ তাদের অপরাধের দায়ভার গ্রহণ করবে না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর