রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভবন ভাঙতে আবার সময় চায় বিজিএমইএ

রুহুল আমিন রাসেল

হাতিরঝিলের ক্যান্সার হিসেবে চিহ্নিত তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের অবৈধ ১৬ তলাবিশিষ্ট বিতর্কিত ভবন ভাঙতে আদালতের কাছে আরও এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সংগঠনটি এর আগেও একাধিকবার সময় বাড়ানোর আবেদন করে সুফল পেয়েছে। সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবর সাত মাস সময় বাড়ানোর আদেশে আদালত বলেছিল, এটিই বিজিএমইএর জন্য ‘শেষ সুযোগ’ এবং এরপর তারা যেন আর সময় না চান।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিদেশে অবস্থানরত বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গত রাতে টেলিফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভবন স্থানান্তরের জন্য আদালতের কাছে আরও এক বছর সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি। তবে ইতিমধ্যে আদালত যে সময় বাড়িয়েছিল, তা এখনো আছে। আমাদের নতুন ভবনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। পাইলিংয়ের কাজ করেছি। বাকি কাজ করতে আরও এক বছর প্রয়োজন। তাই আদালতের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানিয়ে এক বছর সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি। আশা করছি, আদালত তা বিবেচনা করবে।’ এর আগে গত বছর ৮ অক্টোবর রাজধানীর হাতিরঝিলে বিজিএমইএর অবৈধ বহুতল ভবন ভাঙার জন্য  শেষবারের মতো সাত মাসের সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ আদেশে প্রথম দিকে ছয় মাস সময় দেওয়া হলেও পরে তা সাত মাস করা হয়। তারও আগে গত বছর ১২ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে ছয় মাসের সময় দেয় আপিল বিভাগ। বিজিএমইএর তিন বছরের আবেদনের শুনানি নিয়ে ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ভবন ভাঙতে ছয় মাস সময় দেয়। আর গত বছর ৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কত সময় লাগবে, তা ৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিল আপিল বিভাগ। ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ রিভিউ আবেদন খারিজ করে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার রায় বহাল রাখে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবন ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট। ওই বছরের ১৯ মার্চ ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর ২১ মে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। একই বছরের ২ জুন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের করা আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করে হাই কোর্টের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। ৮ নভেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এরপর ৮ ডিসেম্বর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ, যাতে আপিল বিভাগের রায় স্থগিত করে বহুতল ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য তিন বছরের সময় চাওয়া হয়। বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে হাই কোর্টের দেওয়া নির্দেশ বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। তার আগে জমির স্বত্ব না থাকা এবং জলাধার আইন লঙ্ঘন করে রাজধানীর হাতিরঝিলের দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প এলাকায় নির্মিত বিজিএমইএ ভবনটি ভাঙতে পাঁচ বছর আগে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ওই রায়ের পর বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে। আপিলের সেই আবেদন ২০১৬ সালের ২ জুন খারিজ করে রায় দেয় আপিল বিভাগ।

সর্বশেষ খবর