রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

১০ বছরের শিশুকে আটকে রেখে ৬ দিন ধরে ধর্ষণ

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ১০ বছরের শিশু গৃহকর্মীকে ৬দিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পাহাড়িয়াকান্দি ইউপির ব্যাপারীবাড়ির অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম মিয়ার (৬৫) বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেছেন শিশুটির দিনমজুর বাবা। বাবা জানিয়েছেন, ফাঁকা বাড়িতে ঘরবন্দী করে তার মেয়েকে ৬ দিন ধরে একাধারে ধর্ষণ করেছেন আবদুস সালাম মিয়া। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের দিনমজুর বাবা আরও জানান, উপর্যুপরী ধর্ষণের কারণে এক সপ্তাহ ধরে তার মেয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হলে গত ৬ মার্চ মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনমজুর বাবা তার একমাত্র মেয়েকে অভাবের তাড়নায় কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম মিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তার বর্তমান আবাসস্থল নরসিংদীর ভেলানগরের বাসায় কাজের জন্য দেন। শিশুর বাবা জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সালাম মিয়ার স্ত্রী ঢাকায় গেলে বাড়ি ফাঁকা হয়। এই সুযোগে ওই দিন হতে সালাম মিয়া শিশুটিকে ধর্ষণ করতে থাকেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি মেয়ে ফোন করে বিষয়টি তাকে জানিয়ে সাহায্য চেয়েছিল। কিন্তু অসহায় বাবা হিসেবে তিনি তাত্ক্ষণিক কিছু করতে পারেননি। এক পর্যায়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় গত ৬ মার্চ মেয়েকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাত্ক্ষণিক পল্লী চিকিৎসককে দেখানো হলে সেই চিকিৎসক বিষয়টি আঁচ করতে পারেন এবং তাত্ক্ষণিক মেয়েকে বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠাতে বলেন। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ডা.ফাহরিন রুবাইয়া হোসেন পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতি গুরুতর বলে জানান। এরপর ওইদিন দুপুরেই মেয়েকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। গতকাল মেয়েটির বাবা মোবাইল ফোনে এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি আমার অসুস্থ মেয়ের সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলেই আছি। মেয়ে সুস্থ হলে এ বিষয়ে মামলা করে বিচার চাইবো।’ এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সাব্বির রহমান বলেন, ‘মেয়েটিকে নিয়ে তার বাবা যখন সরকারি হাসপাতালে আসেন, তখন আমি নিজে উদ্যোগী হয়ে মেয়েটিকে হাসপাতালে দেখতে যাই এবং মেয়েটির বাবাকে ঘটনাস্থল নরসিংদী থানায় মামলা করতে পরামর্শ দেই।’ এদিকে নরসিংদী জেলার ভেলানগর ফাঁড়ির এএসআই আইরিন সুলতানা মুঠোফোনে জানান, ‘আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। তবে ঘটনাটি জানার পর অভিযুক্ত সালাম মিয়ার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি এখন পলাতক।’ এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাম মিয়াকে তার মোবাইল নম্বরে দুদফা ফোন করলে- জনৈক ব্যক্তি নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত আর্মি অফিসার পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে নিউজ করলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। মেয়েটির বাবার সঙ্গে আমরা আপোস করে নেব। আপনারা বাড়াবাড়ি করবেন না।’

সর্বশেষ খবর