শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

১০ বছর পর দেশে ভিক্ষুক খুঁজে পাওয়া যাবে না : মুহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘১০ বছর পর এ দেশে কোনো ভিক্ষুক খুঁজে পাওয়া যাবে না। তখন কেউ ভিক্ষা করবে না। আমি বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় এলে দেশে কোনো ধরনের অভাব থাকবে না।’

গতকাল রাজধানীর জাতীয় নাট্যশালায় দুর্নীতি প্রতিরোধে শ্রেষ্ঠ কমিটির সদস্যদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৮ বা ১০ বছর পর কেউ বলবে না দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। তখন নতুন  জেনারেশন শুদ্ধাচার কৌশল অনুসরণ করবে। আর দুদক ওয়াচডগ হিসেবে থাকবে। তারা লোকজনকে শুধু নীতি কথা শোনাবে।’ দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম ও মহাপরিচালক জাফর ইকবাল প্রমুখ। অর্থমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এখন অভাবে কেউ মারা যাচ্ছে— এরকম চিত্র বোধ হয় আপনারা দেখেন না। আমার শৈশব-কৈশোর এমনকি যৌবনেও দেখেছি, বাগেরহাটে দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মানুষ হঠাৎ না খেয়ে মরা খুব স্বাভাবিক ছিল। এখন কোথাও না খেয়ে মারা যায় না। অসুখে পড়ে খেতে না পারার কারণে মারা যেতে পারে। শুধু খাবারের অভাবে মানুষ মরে যাচ্ছে— সেটা এখন দেখতে পাবেন না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এমন চেষ্টা করছি, যাতে ভবিষ্যতে সমাজ শুদ্ধাচার কৌশল অটোমেটিক মানুষ গ্রহণ করবে। মিথ্যা কথা বলার প্রয়োজন হবে না। সেখানে অভাবে তার মৃত্যুর সুযোগ থাকবে না। কাউকে ভিক্ষুক হতে হবে না।’ মুহিত বলেন, ‘বাংলাদেশে বেশিরভাগই প্রফেশনাল ভিক্ষুক এবং তাদের কিছু করা যায় না। আমার হিসাবে দেশে ছয় লাখের মতো ভিক্ষুক আছে, যাদের  কোনোমতেই ভিক্ষা বৃত্তির বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। যতই আমরা সাহায্য করি না কেন, তারা আবার ফিরে যায়। এদের কিছু দিন কোথাও বসানো হলে, একটা ঘরবাড়ি দেওয়া হলে— কিছুদিন পর আবার এরা সেই ভিক্ষাতেই ফিরে যায়। কিন্তু প্রয়োজনে ভিক্ষা— সেটা যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা শেখ হাসিনার সরকার করে রাখছে।’ অভাবের কারণে এখন আর কেউ দুর্নীতি করে না- উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতির পথে। আমরা সামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের আরও উন্নতি হতো, যদি আমরা লোভের কারণে দুর্নীতি বন্ধ করতে পারতাম।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে।’

 দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ইদানীং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনে কোনো কোনো অসাধু কোম্পানির লোকজন এমন আর্থিক বিবরণী দিচ্ছেন— যা সঠিক নয়। আর এগুলো করছে সিএ ফার্ম। ওই সিএ ফার্ম আবার ভিন্ন ভিন্ন আর একটি আর্থিক বিবরণী ব্যাংকে এবং আয়কর বিভাগে জমা দিচ্ছে। এটা কী করে সম্ভব? এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। বিষয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেখাবেন কিনা অথবা আপনি বললে আমরাও দেখতে পারি। কারণ এটা একটি দুর্নীতি।’ অর্থমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অভিযোগ যদি সত্যি হয়— তাহলে দুদক অনুসন্ধান করবে। আমরা চাই নৈতিকতার মানদণ্ডে থাকব। আমরা চাই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো সব জায়গায় একই আর্থিক বিবরণী জমা দেবে।’

সর্বশেষ খবর