শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

পরিবেশবন্ধু গুইসাপ

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

পরিবেশবন্ধু গুইসাপ

গুইসাপ অতি উপকারী প্রাণী। পরিবেশবন্ধুও বলা হয়। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায়ও অতুলনীয়। এক সময় এদের প্রায়ই দেখা গেলেও বর্তমানে বিপন্নপ্রায় সরীসৃপ শ্রেণির এই প্রাণী। আমাদের দেশে গুইসাপের তিনটি প্রজাতি টিকে থাকলেও, কিছু লোক বিচিত্র এই প্রাণী বিলীন করতে উঠে পড়ে লেগেছে। ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রাণীটি সংরক্ষিত হলেও, অতিমূল্যবান চামড়ার জন্যেই নিধন করা হচ্ছে এদের। সরকারি নিষেধাজ্ঞার পরেও থামছে না গুইসাপের চামড়ার পাচার। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণেই এই উপকারী প্রাণীটি আজ বিলুপ্তির পথে। কথা হয় সিলেটের বিশ্বনাথে গুইসাপ ধরতে আসা উপজাতি জনগোষ্ঠির কয়েকজনের সঙ্গে। তারা হলেন, সুনামগঞ্জের অনিল পাত্র, ভারল পাত্র, ছাবাই পাত্র ও অঞ্জন পাত্র। এসময় তারা উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের বাউসী গ্রামে ধানী জমির পার্শ্ববর্তী ঝোপঝাড়ে গুইসাপ ধরছিলেন। তারা জানালেন, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুইসাপের উপকারিতার কথা তাদের জানা নেই। দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন এলাকায় গুইসাপ ধরে আসছেন তারা। খাবার, ঔষধ তৈরি ও টাকা উপার্জনের জন্যেই গুইসাপ ধরেন তারা।    

উদ্ভিদ ও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিষধর সাপ ও ক্ষতিকর পোকামাকড় এদের প্রিয় খাদ্য। এগুলো খেয়ে তারা আমাদের উপকার করে। ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফেলার কারণে ফসলের ফলন বৃদ্ধি পায়। এদের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকলে পোকামাকড় ও ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে যাবে। অনুকূল পরিবেশ হবে বিষাক্ত সাপের। যা পরিবেশ ও মানুষের জন্য মোটেও সুখকর হবে না। এ বিষয়ে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের গবেষণা সহযোগী শিহাব খালেদীন বলেন, গুইসাপ নিরীহ প্রকৃতির প্রাণী হওয়ায় মানুষ দেখলেই পালিয়ে যায়। তারা আমাদের কোনো ক্ষতিসাধন করে না। বরং উচ্ছিষ্ট ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপের ডিম খেয়ে তারা সেই সাপগুলোর সংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে। গুইসাপ পরিবেশের জন্যে একটি উপকারী প্রাণী। তাদের বিষাক্ত মনে করে নিধন করা ঠিক নয়। প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় গুইসাপ সংরক্ষণ করা জরুরি। না হলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর